মঙ্গলবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৪ ১৪৩২   ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

কম্বোডিয়ায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:১৫ এএম, ২৯ জুলাই ২০২৩ শনিবার

বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন নীতি অপরিবর্তিত থাকবে

     
আজকাল রিপোর্ট -
কম্বোডিয়ায় মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও সাহায্য কর্মসূচি স্থগিত করার পরদিনই পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। কম্বোডিয়ায় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না হওয়ায় সেখানে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কম্বোডিয়ার সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই রোববার ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেয়। এতে বলা হয়, কম্বোডিয়ার সাধারন নির্বাচন ফ্রি ও ফেয়ার কোনটাই হয়নি। এমনকি নির্বাচন শুরুর আগ থেকেই ক্ষমতাসীন সরকার বিরোধী দল, মিডিয়া ও সিভিল সোসাইটিসহ সংবিধানকে অবজ্ঞা করে আসছিল। আর্ন্তজাতিক মানের একটি নির্বাচনের ধারে কাছেও তারা যায়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও কিছু বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করলো।
 এই পরিপ্রেক্ষিতে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন আগস্ট মাসের প্রথম দিকে  পদত্যাগ করবেন এবং তার ছেলে হুন মানেতের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করবেন। তার এ ঘোষণায় সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলেছে, নির্বাচন ও মানবাধিকার প্রশ্নে সে দেশের সরকার কিছু বলেনি। আমরা এ দুটি বিষয়ের ফয়সালা দেখবার প্রত্যাশায়। আমরা সবসময়ই কম্বোডিয়ান জনগনের পাশে রয়েছি।
এদিকে গত মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র মিলার সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন,  বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ও মানবাধিকার প্রশ্নে সেক্রেটারি অব স্টেট  ব্লিনকেন সেখানে আগাম ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ প্রশ্নে আমাদের অবস্থান আগের মতোই রয়েছে। আমরা সেখানে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখার প্রত্যাশায় রয়েছি। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকারি দলের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছে, এখনও সময় আছে তারা আর্ন্তজাতিক মানের একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে। তারা পুনরুদ্ধার করতে পারে বহুদলীয় গনতন্ত্র। রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা বন্ধ করতে হবে। মিডিয়াকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। কোনভাবেই তাদের ওপর হস্তক্ষেপ নয়।
২৩ জুলাই কম্বোডিয়ার নির্বাচনে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল ছিল না। জেল জুলুম ও মামলা দিয়ে বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রাখা হয়েছিল। সবাই নিশ্চিত ছিল তথাকথিত  এ ভোটে আবারও জয়ী হবে হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটিকে টানা ৩৮ বছর ধরে শাসন করছেন কম্বোডিয়ার ‘গণতান্ত্রিক মডেলের স্বৈরশাসক’ হসেবে পরিচিত প্রধানমন্ত্রী হুন সেন (৭০)। এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি এই তথাকথিত ‘গণতান্ত্রিক’ শাসক ১৯৮৫ সাল থেকে তার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর একের পর এক কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োগ করেছেন। এমনকি দেশের আদালতকেও ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। সামরিক বাহিনী, পুলিশসহ গোয়েন্দা গোষ্ঠীকে রেখেছেন হাতের মুঠোয়। সংসদ-সদস্যদের তাদের পদমর্যাদা থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ নেতাদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গ্রেফতার করেছেন। পাঠিয়েছেন  নির্বাসনে। রোববারের নির্বাচনে হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) জিতেছে ১২০টি আসনে। আর তার অনুগত বিরোধী দল ফানসিনপেক পার্টি পেয়েছে ৫টি আসন।
কাম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন নির্বাচনের তিন দিনের মাথায় ২৬ জুলাই পদত্যাগের  ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আগস্ট মাসের প্রথমদিকে দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন এবং তার ছেলে হুন মানেতের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করবেন। সত্তর বছর বয়স্ক হুন সেন এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দিন ধরে ক্ষমতায় থাকা নেতাদের অন্যতম।