বুধবার   ১৯ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৪ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

হঠাৎ রাজনীতির হাওয়া বদল

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৩:২৯ এএম, ১০ জুন ২০২৩ শনিবার


মাসুদ করিম, ঢাকা থেকে
বাংলাদেশের রাজনীতির হাওয়া হঠাৎ বদলে গেছে। রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আমলা সবাই কানাঘুষা করছেন। দেশে কী হচ্ছে! ঝড়ের আগে যেমন গুমোট অবস্থা থাকে অনেকটা তেমন। বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশেও একই দৃশ্যপট। কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। কী ঘটতে যাচ্ছে কেউ বলতে পারছে না।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সাল থেকে ভিন্ন। নতুন ভিসানীতি ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র বেশ সক্রিয়। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ওয়াশিংটন উড়ে যাচ্ছেন। রাজনীতির অন্দর মহলে শলাপরামর্শ হচ্ছে। ওয়াশিংটন থেকে বাইডেন প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা কোরাসে বলছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। শেখ হাসিনার সরকার বারবার সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার করছে। যদিও কীভাবে হবে সুষ্ঠু নির্বাচন তার কোনও রূপরেখা দেয়নি কেউ।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে অনঢ় বিএনপি। রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি দিচ্ছে। এসব কর্মসূচি দিয়ে যে সরকার পতন হবে না-এটা অনেকটাই নিশ্চিত। এর চেয়ে কঠিন কর্মসূচি দিয়েও অতীতে সরকার পতন হয়নি। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কূটনীতিকরা ঘন ঘন বৈঠক করছেন। কূটনীতিকদের প্রশ্নের সীমা নেই। বিএনপি কী করবে? সরকারপতনে তাদের কৌশল কী? বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? এসব প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা ভোটে যাবে না। কূটনীতিকরা বলছেন, পরিস্থিতির কারণে দলগুলো তাদের অবস্থান দ্রুত পাল্টাতে পারে। নির্বাচনে যেতে পারে।
কূটনীতিকরা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গেও বসছেন। সেখানেও নানা প্রশ্ন। ওয়াশিংটনের বার্তা বোঝাতে শুধু ভিসানীতি নয়; কংগ্রেসম্যানদের চিঠিতেও তা স্পষ্ট। বাইডেনকে তারা বলছেন, শেখ হাসিনার ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য। শেখ হাসিনা বলছেন, কোনও চাপের কাছে তিনি নতি স্বীকার করবেন না। ভিসা না দিলে ২০ ঘন্টার জার্নি করে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন না। অনেক মহাদেশ আছে, মহাসাগর আছে। সেগুলোতে যাবেন। শেখ হাসিনার সরকার দেশের অভ্যন্তরেও বেশ চাপে আছে। জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। মে মাসে মূল্যস্ফীতি প্রায় ডবল ডিজিট ছুঁই ছুঁই করেছে। এক যুগের মধ্যে মূল্যস্ফীতির রেকর্ড। শেখ হাসিনার সরকারের সবচেয়ে বেশি সুনাম ছিলো বিদ্যুৎ নিয়ে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়ে প্রশংসায় ভেসেছিলেন। এখন অসহনীয় লোডশেডিং। মহামারি ভালই সামাল দিয়েছিলো সরকার। কিন্তু ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে ডলার সংকটে ভুগছে বাংলাদেশ। এসব কারণে অর্থনীতি কঠিন সময় পার করছে। শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেছেন আগামী নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জের।