বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০১:৩৩ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার

ঢাকা অফিস
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। সোমবার নির্বাচন ভবনে মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে এ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। মো. সাহাবুদ্দিন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। সাহাবুদ্দিনকে রোববার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন নিয়ে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে মনোনয়ন দিয়ে চমক দেখিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত ছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন। তবে জমা দেওয়ার সময়ে তিনি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে যাননি। তার পক্ষে বেলা ১১টা ও ১১টা ৫ মিনিটে দুটি মনোনয়নপত্র জমা দেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। তখন তিনি ইসির অন্য আরেকটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন।
দুটি মনোনয়নপত্রেই প্রস্তাবক ছিলেন ওবায়দুল কাদের। আর সমর্থক ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জনাব সাহাবুদ্দিন চুপ্পু উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, শুকরিয়া। ভালো লাগছে। সবই সর্বশক্তিমান আল্লাহর ইচ্ছা। এ সময় তাকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় গতকালই সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনে একমাত্র ব্যক্তির প্রার্থিতা দাখিল হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুসারে সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হলো।
সাহাবুদ্দিন দীর্ঘদিন জুডিশিয়াল সার্ভিসে চাকরি করেছেন। তিনি এতদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ইতোপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার বিভাগে) ক্যাডারে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন।
মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মী দ্বারা সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন এবং মানবতাবিরোধী কর্মকা-ের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকা-ের পর কারাবরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্র সন্তানের পিতা। তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্মসচিব ছিলেন।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল শেষ হচ্ছে। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হবেন মো. সাহাবুদ্দিন।