বুধবার   ১৯ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

বান্দরবান সীমান্তে রোহিঙ্গা শিবিরে গোলাগুলি

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০৪:০৪ এএম, ২১ জানুয়ারি ২০২৩ শনিবার


আজকাল ডেস্ক
বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম তমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলিতে বুধবার একজন নিহত হবার পর বৃহস্পতিবার সকালেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার তমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন লাগার পর কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও ঠিক কতজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকেছে সে সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসন দাবি করছে সংখ্যাটি বেশি নয়। যদিও শূন্যরেখায় অবস্থানকারী কয়েকজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়েছে যাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা এখন চলছে। তমব্রু সীমান্তের এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পটি আসলে বৈধ বা অনুমোদিত কোনো রোহিঙ্গা শিবির নয়। মিয়ানমার থেকে পালিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি এমন ছয় শ’র বেশি রোহিঙ্গা পরিবার সেখানে আন্তর্জাতিক শূন্যরেখায় অনেক দিন ধরেই অবস্থান করছে। স্থানীয়রা বলছেন, ভোরে প্রায় এক ঘণ্টা গোলাগুলির আওয়াজ শুনেছেন তারা। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে বুধবারের ঘটনার পর সেখানে নতুন করে আর কিছু ঘটেনি।
নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই বুধবার সংঘর্ষ ও বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ‘যতটুকু তথ্য পেয়েছি তাতে রোহিঙ্গাদের দু গ্রুপÍআরসা এবং আরএসওর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বুধবার। এটি তারা করেছে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার অংশ হিসেবে। ওই সংঘর্ষেই একজন নিহত হয়েছেন। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে খবর পাচ্ছি। ঘটনাটি আন্তর্জাতিক শূন্যরেখায় হওয়ায় আমাদের সরাসরি কিছু করার নেই। তবে কয়েকজন বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলো যাদের কয়েকজনকে ধরা হয়েছে ও বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও বলেছিলেন যে কয়েকজন রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করেছে এবং তাদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
মিয়ানমারের দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে সক্রিয় তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে গোলাগুলি শুরু হয় এবং এটি চলে দুপুর প্রায় ১২টা পর্যন্ত। এসময় সেখানকার অন্তত পাঁচশ ঘরে আগুন দেয়া হয় বলে জানা যাচ্ছে। ফলে এসব ঘরবাড়িতে থাকা রোহিঙ্গারা সেখানকার একটি স্কুলসহ আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এরপরই আরসা ও আরএসওর মধ্যে এ সংঘর্ষ চলছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে খবর পাওয়া যায়, যা পড়ে প্রশাসনও নিশ্চিত করে। পরে রাতে আর কোনো ঘটনা না ঘটলেও আজ বৃহস্পতিবার ভোরে আবারো ক্যাম্পের ভেতরে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়।