ডান্ডা-বেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় বিএনপি নেতা
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৭:৪৪ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার
সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়
আজকাল ডেস্ক
কারারুদ্ধ বিএনপি নেতা আলী আজমকে হাতকড়া ও ডান্ডা-বেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় নেওয়ার ঘটনায় দেশ-বিদেশে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় বইছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির এই ঘটনায় আইন সংশোধনের দাবী উঠেছে। জানাজায় দাঁড়ানোর সময় ডান্ডা-বেড়ি ও হাতকড়া পরিয়ে রাখা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এই ধরনের আইন সংশোধন সময়ের দাবি বলে অনেকেই অভিমত দিয়েছেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছেন, এ ঘটনায় জেলকোডের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
জানাজায় দাঁড়ানোর সময় ডান্ডা-বেড়ি ও হাতকড়া পরিয়ে রাখা সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা। তারা বলছেন, কোনো মানুষের সঙ্গে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ না করার কথা সংবিধানে উল্লেখ আছে।
আইন সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির মহাসচিব নূর খান লিটন বলেন, কাউকে জানাজায় দাঁড়ানোর সময় অবশ্যই হ্যান্ডকাফ বা ডান্ডা-বেড়ি খুলে দিতে হবে। আমাদের সংবিধান বলেছে, কোনো মানুষের সঙ্গে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করা যাবে না। কালিয়াকৈর যেটা ঘটেছে সেটা সংবিধানের লঙ্ঘন হয়েছে।
একই কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, জেল কোডে যাই থাকুক না কেন সংবিধানের ওপরে কিছু নেই। সেখানে ডান্ডা-বেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় নিয়ে যাওয়া আইনের বরখেলাপ, সংবিধানের বরখেলাপ।
তবে গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার বজলুর রশিদ আখন্দ বলেন, আসামি জেলের বাইরে গেছে, তাই নিরাপত্তার জন্য ডান্ডা-বেড়ি দিয়েছি। ওয়ারেন্টে দাগি-নিদাগি কোনো কিছু বলা থাকে না। আমি শুধু মামলার সেকশনগুলো (ধারা) দেখি। সেকশনে আছে, বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে ৩, ৪, ৫ ধারা; বিস্ফোরক আইনের মামলা আমি কি ছোট করে দেখব? ওখানে যারা তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের ডান্ডা-বেড়ি খোলার সুযোগ ছিল না। তাদের কাছে এর চাবিও ছিল না। আমরা আইনের বাইরে কোনো কাজ করিনি।
উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশেই বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’ মামলা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ২৯ নভেম্বর কালিয়াকৈর থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়। মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ নেতাকর্মীর নাম এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০/১৫০ জনকে আসামি করা হয়। ঐ মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে পহেলা ডিসেম্বর রাতে আলী আজমকে কালিয়াকৈরের পাবরিয়াচালা গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
