বুধবার   ১৯ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৫ ১৪৩২   ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

কী হচ্ছে ১০ ডিসেম্বর?

সাপ্তাহিক আজকাল

প্রকাশিত : ০২:২২ এএম, ১৬ নভেম্বর ২০২২ বুধবার

১০ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে এই ১০ডিসেম্বর। দিনটি উপলক্ষে একদিকে বিএনপি নেতাদের হুঁশিয়ারি অন্যদিকে সরকার সমর্থীত দল আওয়ামী লীগের কঠোর বার্তা। ১০ ডিসেম্বরের পরে খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। এর বাইরে কারো কথায় দেশ চলবে না। গত ৮ অক্টোবর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের এমন বক্তব্যে রাজনীতিতে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।

একই সঙ্গে বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলেছেন, তাদের নেতা তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। তবে এসব বিষয়ে বিএনপি নেতারা বলছে, ওইদিন চলমান আন্দোলনের একটি চূড়ান্ত রূপ দিতে চায় দলটি। এখন জনমনে রয়েছে রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও, কি হচ্ছে ১০ ডিসেম্বর?

এদিকে, রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আজ মঙ্গলবার(১৫ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বৈঠকের পর ডিএমপি উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন বলেন,  ডিএমপি থেকে তাদের বলা হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া তথ্যের ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে বলে। তবে কবে নাগাদ অনুমতি দেওয়া যাবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

ইতিমধ্যে দলটির দশটি সাংগঠনিক বিভাগের ৬টিতে গণসমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে। ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিভাগীয় গণ সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় গণ সমাবেশ শুরু করে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শেষ হবে। এই মহাসমাবেশ থেকেই পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। এরপর নতুন বছরের শুরু থেকেই সমমনা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকার বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে নামবে তারা।

বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে কঠোর বার্তা আছে আওয়ামী লীগ থেকেও। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশমুখে সমাবেশ এবং পাড়া-মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকবে আওয়ামী লীগ। ১০ ডিসেম্বরের পর বিএনপিকে লালকার্ড দেখানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ৩১ অক্টেবর গাজীপুরে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এদিকে, রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে ৪ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন ১০ডিসেম্বর বিএনপির আন্দোলনের পতন ঘণ্টা বাজবে। ৫ নভেম্বর রাজধানীর বাড্ডায় অঅরেক অনষ্ঠানে করে ওবায়দুল কাদের বলেন বিএনপিকে আর ছাড় দেওয়া হবে না। ডিসেম্বরে খেলা হবে, প্রস্তুত হয়ে যান। সে সময় রাজপথ কেবল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির দখলে থাকবে, বিএনপির দখলে থাকবে না। ৩১অক্টোবর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে এক সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, বিএনপিকে মোকাবিলা করার জন্য যুবলীগ প্রস্তুত আছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজপথে থাকবে যুবলীগ।

এদিকে আওয়ামী লীগের এমন কঠোর হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে বিএনপি বলছে, তাদের চলমান বিভাগীয় গণ সমাবেশগুলোতে নানাভাবে বাধা দিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। সমাবেশের দুইদিন আগেই পরিবহণ বন্ধসহ মিথ্যা মামলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে গ্রেফতার, তাদের নেতাকর্মীদের হাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা নির্যাতন করে আসছে। এসব কিছু উপেক্ষা করেই অধিকার আদায়ে সমাবেশে যোগ দিচ্ছে সাধারণ জনগণ। বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মতো ঢাকার মহাসমাবেশের সময়ও পরিবহন ধর্মঘট ডেকে কিংবা পরিকল্পিতভাবে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে তারা। তবে যত বাধা, হামলা, মামলা, নির্যাতন করুক না কেন জনগণ মহাসমাবেশে যোগ দিবেই।

সমাবেশের অনুমতি না পেলে বিএনপির অবস্থান কি হবে জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সমাবেশের অনুমতি দিবে না বলে মনে হচ্ছে না।  আমরা ডিএমপি কমিশনারকে সবকিছু বলে এসেছি। অনেক কিছু স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশের জন্য অবদানের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে আসছি। আশা করি সমাবেশের অনুমতি দিবেন। কোন রাজনৈতিক দলের হুমকি, হুঁশিয়ারি আমরা তোয়াক্কা করি না।

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান জানান, আমরা সবসময় শান্তিপুর্ণ সমাবেশ করে আসছি। ঢাকায়ও শান্তিপুর্ণ সমাবেশ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা আশাবাদী প্রশাসন অনুমতি দিবেন। এই বিষয়ে প্রশাসন সবধরনের পদক্ষেপ নিবেন।

অনুমিত না পেলেও কি সমাবেশ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন অবশ্যই অনুমতি দিবেন। আমরা সমাবেশ করবো। সমাবেশে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভিন্ন হঁশিয়ারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কে কি বলল সে বিষয়ে দেখবোনা। ১০ডিসেম্বর আমাদের পূর্র্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।