নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে চার ঘণ্টা ধরে মর্টারশেল বিস্ফোরণ
সাপ্তাহিক আজকাল
প্রকাশিত : ০৫:৪৭ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০২২ রোববার
নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা থেকে ফুলতলী পর্যন্ত সীমান্তের ওপার থেকে চার ঘণ্টাব্যাপী মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এছাড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণের পাশাপাশি প্রচণ্ড রকম গোলা গুলির শব্দও ভেসে এসেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সীমান্তের পরিস্থিতি বিবেচনায় জামছড়ি সীমান্তের কাছ থেলে ৩০টি পরিবার কে সরিয়ে নেওয়া হয়। তারা স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত এই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
এদিকে, মিয়ানমারের ছোঁড়া গুলিতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ও স্হানীয় এক সাংবাদিক।
স্হানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিস্থিতি চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। বাড়ির ছোট ছোট ছেলে -মেয়েরা ভয়ে কান্নাকাটি করছে।
চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৪, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চেরারমাঠ সীমান্তের ৪৪, ৪৫, ৪৬ ও দোছড়ি ইউনিয়নের ৪৭, ৪৮ ও ৫৯ পিলার পুরান মাইজ্জা ক্যাম্প, অংচাফ্রী ক্যাম্প ও সালি ডং ক্যাম্পের চৌকি থেকে অগণিত মর্টার ও আর্টিলারি বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে। মনে হয়েছে যেন এপারে ভূমিকম্প হচ্ছে।
তিনি বলেন, দুপুর ১টা থেকে ওপার থেকে গোলাগুলি ও আর্টিলারি মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজে এপারের বেশ কয়েকটি গ্রাম কেঁপে ওঠেছে। এলাকাবাসী ছুটাছুটি করছেন এবং সীমান্তে অবস্থানরত সবাই আতঙ্কিত। কারণ এর আগে এ ধরনের গোলাগুলির আওয়াজ কখনো শোনেনি তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দোছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইমরান।
তিনি জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১২টায় হঠাৎ দোছড়ির বাহিরমাঠ এর ৭, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিকটবর্তী ৪৯, ৫০ সীমান্ত পিলারের ঠিক কাছাকাছি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজেপি) এর সাথে সেই দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রচণ্ড গোলাগুলি ও মর্টারশেলের বিকট শব্দ পাওয়া গেছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দু শুক্কুর জানান, সকালে ধানক্ষেতে কাজ করার সময় হঠাৎ মিয়ানমারে ভূখণ্ডে প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান। তখন ধানক্ষেত থেকে তিনি সরে আসার পরপরই দুইটি ভারী অস্ত্রের গুলি লেমুছড়ি বিজিবি ক্যাম্পের প্রায় তিনশত গজ দূরত্বের মধ্যে এসে পড়ে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দুই মাসের বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে রাখাইন রাজ্যের ওয়ালিডং এবং খ্য মং সেক পাহাড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির তুমুল লড়াই চলছে। দেড় মাস পর এ যুদ্ধের ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিকের জেলা শহর মংডু এবং তার আশপাশের এলাকায়। বর্তমানে দক্ষিণ মংডুর বুচিডং, রাচিডং এলাকায় উভয় পক্ষের তুমুল লড়াই চলছে। ১২ থেকে ১৪ দিন আগে দোছড়ি ইউনিয়নে দক্ষিণ বাহির মাঠ সীমান্তের বিপরীতে রাখাইন রাজ্যের পাহাড়ে স্থাপিত বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) একাধিক চৌকি দখলে নেয় আরাকান আর্মি। এখন চৌকিগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। গুলি বর্ষণের পাশাপাশি মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে।
