বৃহস্পতিবার   ২০ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৬ ১৪৩২   ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি-জামায়াত পরিকল্পিতভাবে হামলা করছে: আ.লীগ

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৯:১০ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ রোববার

পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচাল করতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করছে বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ।

শনিবার মধ্যরাতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগের রাতেই জামায়াত-বিএনপির ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের পরিবেশকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করতে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর এ হামলা চালাচ্ছে। একই সঙ্গে লন্ডনে বসে দুর্নীতির দায়ে পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজগুবি মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে। সারা দেশে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভোটকেন্দ্র দখলেরও অপতৎপরতা চালাচ্ছে তারা।’

আওয়ামী লীগের দুই কর্মীকে হত্যার মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে রাতে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় আওয়ামী লীগের সাইফুল ইসলাম ও চট্টগ্রামের পটিয়ায় যুবলীগ নেতাকে নৃশংসভাবে বিএনপি-জামায়ািত সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। এর মাধ্যমে তারা নির্বাচনের নৈরাজ্য সৃষ্টির নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছে।’

নির্বাচনের আগের দিন বিএনপি-জামায়াত ভোট কেন্দ্র দখলে নিয়েছে দাবি করে রহমান বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল সাহেবদের পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় ভোটকেন্দ্র দখল করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করছে। নোয়াখালী-২ আসনে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারকে মারধর করে ভোট কেন্দ্র দখলে নিয়েছে এবং হামলায় ছয় জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি আমতলী ইউনিয়নের যুবদলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ওপর হামলা চালিয়ে পাঁচ জনকে আহত করেছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করেছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ভোট কেনার জন্য আইএসআইয়ের পাঠানো হাজার কোটি টাকা দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করছে।’

রহমান আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যেই ঠাকুরগাঁয়ে কেন্দ্র দখলের সময় বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী আটক হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভোট কেনার সময় ৯ জন বিএনপি নেতাকর্মী আটক হয়েছে। কেন্দ্র দখলের সময় যশোরে দুই জন বিএনপি নেতা আটক হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা জানান, ‘এক অডিও বার্তায় কর্নেল অলি আহমেদ লাঠিসোটা নিয়ে ভোট কেন্দ্র দখলের নির্দেশ দিয়েছেন। জামায়াতের সন্ত্রাসীরা বরগুনার আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভোটকেন্দ্রে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছে। সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ক্যাম্পে হামলা করে পাঁচ জনকে আহত করেছে। একইভাবে সারাদেশে তারা সহিংসতা ছড়াচ্ছে।’

বিএনপি নির্বাচন নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যাচার করছে দাবি করে রহমান বলেন, ‘নয়াপল্টন আর গুলশানে বসে বিএনপি নেতারা একের পর এক নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও কল্পকাহিনীর মাধ্যমে জাতিকে বোকা বানানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা সারা দেশের জনগণকে অত্যন্ত সতর্ক ও ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা বলতে চাই দেশের এক বিশেষ মুহূর্তে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’

ঐক্যফ্রন্টের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমরা বিএনপি-জামায়াত ও ফ্রন্ট অশুভ জোট নেতাদেরকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই জনগণের সাংবিধানিক ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। গণতন্ত্রকামী বাংলাদেশের জনগণকে নিরাপদে নির্ভয় ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিন সন্ত্রাস নৈরাজ্য সহিংসতা ও গুজব বন্ধ করুন অথবা জনগণ আপনাদের ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচন বানচালের কোনও ষড়যন্ত্র বরদাশত করবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের প্রাক্কালে আমরা দেশবাসীকে এই ধরনের সন্ত্রাসী এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বি এম মোজাম্মেল হোসেন, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।