শুক্রবার   ০৯ মে ২০২৫   বৈশাখ ২৫ ১৪৩২   ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৬

আফগানদের বিপক্ষে কী করবে সাকিবের দল?

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০১:৩০ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রোববার

টেস্ট শুরুর আগে সব হিসেব নিকেশেই এগিয়ে ছিল টাইগাররা। কিন্তু খেলা মাঠে গড়ানোর পর থেকেই বদলে যায় সব সমীকরণ। অভিজ্ঞতায় অনেকদূর পিছিয়ে থাকা আফগানরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে দীর্ঘ পরিসরের মেজাজটা তারা ভালই রপ্ত করেছে। এ ফরম্যাটের ধরন, মনোযোগ, মনোসংযোগটাও তাদের বেশ ভাল। সেই ভালোর রূপের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি সাকিবের দল।

এখন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে পারবে টাইগাররা? এমনিতেই এই ফরম্যাটে আফগানিস্তানের গায়ে আছে ভাল, লড়িয়ে দলের তকমা। আর সেখানে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ তুলনামুলক দূর্বল। সাফল্যের হার কম, ব্যর্থতাই বেশি।

 

গত বছর ভারতের দেরাদুনে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানদের উজ্জীবিত পারফরমেন্স আর রশিদ খানের লেগব্রেক গুগলির সামনে রীতিমত নাস্তানাবুদই হয়েছিল টাইগাররা। তিন ম্যাচের সিরিজে টাইগারদের হোয়াইটওয়াশ করে ছেড়েছিল আফগানিস্তান। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়েও আফগানরা এগিয়ে।

আজ (রোববার) সেই আফগানিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। আর সে কারণেই বাংলাদেশের মাটিতে চলমান তিন জাতি টি-টোয়েন্টি আসরে বাংলাদেশ নয় ফেবারিট ভাবা হচ্ছে আফগানিস্তানকে। তার মানে টেস্টে সাকিব বাহিনী ফেবারিটের তকমা নিয়ে মাঠে নামলেও, ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে ফেবারিট রশিদ খানের দল।

সেটা যে শুধু আগের ইতিহাস-পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে, তাও নয়। শনিবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচেই পরিষ্কার হলো টি-টোয়েন্টিতে আফগানরা আরও উজ্জ্বল, সমৃদ্ধ ও শক্তিশালি। যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৮ ওভারে ১৪৬ রানের টার্গেট তাড়া করেই ধুঁকছিল বাংলাদেশ, সেই মাসাকাদজার দলের বিপক্ষে হেসে খেলে জিতলো আফগানরা।

শুধু জিতলোই না। রীতিমত জিম্বাবুয়ানদের উড়িয়ে দিল রশিদ খানের দল। ম্যাচের একটি ছোট পরিসংখ্যানই বলে দেবে আফগানদের আধিপত্য কতটা প্রবল ছিল। ১৫ ওভার শেষে তাদের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১০৯। আর ২০ ওভার শেষে রান গিয়ে ঠেকলো ১৯৭ ‘এ। মানে শেষ ৫ ওভারে ৮৮, স্ট্রাইকরেট আড়াইশোর ওপরে।

এর মধ্যে ১৭ নম্বর ওভারের তৃতীয় বল থেকে ১৮ নম্বর ওভারের তৃতীয় ডেলিভারি পর্যন্ত সাত বলে পরপর সাত ছক্কায় আসে ৪২ রান। যার ২৪ তুলে নেন মোহাম্মদ নবী (টেন্ডাই চাতারার বলে পরপর চার ছক্কায়)। আর ঠিক পরের ওভারে নাজিবউল্লাহ জাদরান টানা তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকান আরেক পেসার নেভিল মাদজিভাকে।

নাজিবউল্লাহ জাদরান ২৩০.০০ স্ট্রাইকরেটে ৩০ বলে ৬৯ (পাঁচ বাউন্ডারি আর ছয় ছক্কা), অন্যদিকে মোহামামদ নবীর ব্যাট থেকে আসে ১৮ বলে ৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংস (২১১.১১ স্ট্রাইকরেটে)।

এই উজ্জীবিত আফগানদের সঙ্গে কতটা কুলিয়ে উঠতে পারবে সাকিবের দল? জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুরুর বোলিং আর ব্যাটিংয়ে আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাটিংটা বাদ দিলে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরমেন্স ছিল সাদামাটা। অমন পারফরমেন্স নিয়ে রশিদ খান বাহিনীর সঙ্গে কুলিয়ে ওঠা কঠিন।

টপ অর্ডারে সৌম্য, লিটন, সাকিব কেউ রান পাননি। মিডল অর্ডারে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ আর সাব্বিরের ব্যাটেও রান খরা। যা করার করেছেন আফিফ ও মোসাদ্দেক। এই দুজনার একটি পার্টনারশিপ দিয়ে আফগানদের সাখে পেরে ওঠা খুব কঠিন হবে। কারণ আফগানদের বোলিং অনেক বেশি ধারালো, বৈচিত্রও অনেক। স্পিন বোলিং ডিপার্টমেন্টটা অনেক বেশি সমৃদ্ধ ।

আবার ব্যাটিংয়ও আফগানদের আছে পাওয়ার ও পিঞ্চ হিটিংয়ের বাড়তি ক্ষমতা। ভাল ও সমীহ জাগানো বলকেও ‘দুম’ করে ছক্কা হাঁকানোর সামর্থ আছে আফগানদের। তাই আফগানদের হারাতে দরকার ব্যাটিং ও বোলিংয়ে উন্নতি। সাকিবের দল কি সে উন্নতি ঘটাতে পারবে আজকের ম্যাচে?