গর্ভকালীন নেতিবাচক চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন সহজেই!
স্বাস্থ্য ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৬:৪১ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

গর্ভাবস্থায় নানারকম চিন্তা মাথায় আসে নারীদের। আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই বাড়তি আর বাজে চিন্তার প্রভাবটা কিন্তু খুব একটা ভালো নয়। মা এবং সন্তান— দুজনের উপরেই পড়তে পারে আজেবাজে চিন্তার নেতিবাচক প্রভাব। এইরকমের চিন্তা নারীকে অনেক বেশি হতাশ ও কর্কশ করে ফেলে।
উদ্বিগ্নতায় ভোগেন গর্ভবতী নারী। ফলাফলটা তাই মোটেও ভালো কিছু হয় না। কী করে এই সমস্যার হাত থেকে দূরে থাকবেন? কীভাবে গর্ভকালীন নেতিবাচক সমস্ত বাড়তি চিন্তাকে এড়িয়ে চলবেন? চলুন, দেখে নেওয়া যাক উপায়গুলো-
শরীরচর্চা-
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। এ সময়ে শরীরচর্চা করলে এটি মানসিকভাবে আপনাকে ব্যস্ত রাখবে। শরীরের ইতিবাচক হরমোনগুলো আরও বেশি কাজ করবে। বিশেষ করে, চেষ্টা করুন সাইকেল নিয়ে বাইরে বের হতে বা একটু হাঁটতে। এতে করে আপনার মন ও শরীর দুটোই ভালো থাকবে।
পরিমিত পরিমাণে ঘুমানো-
পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের মস্তিষ্ককে যেকোনো সমস্যা ও মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে। তাই গর্ভবতী নারীর উচিত সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে ঘুমানো। এটি যেমন তার নিজের জন্য স্বাস্থ্যকর, তেমনি তার শিশুর জন্যেও। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো আবশ্যক এক্ষেত্রে।
নতুন অভ্যাস তৈরি করুন-
কী করতে ভালোবাসেন আপনি? গান গাইতে, মুভি দেখতে, বই পড়তে? যে অভ্যাসটিই আপনার থাকুক না কেন, সেটিকে আবার নতুন করে জাগিয়ে তুলুন। তাহলে, নতুন অভ্যাসে ব্যস্ত থাকবে আপনার মস্তিষ্ক। বাড়তি ভাবনার জন্য খুব বেশ সময় পাবে না।
কাজে মন দিন-
কাজ বাড়তি চিন্তাকে দূর করে দেয়। কথাটি মোটেও মিথ্যে নয়। ঘরের কাজ কিংবা অন্যকিছু— নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। চেষ্টা করুন নিজের এই সময়টিকে ফলপ্রসূ করে তুলতে। অনেকসময় কাজ না করে বাড়িতে বসে থাকায় নিজেদের আত্মবিশ্বাস কমে যায় নারীদের মধ্যে। ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তারা।
পরবর্তীতে কাজে আর ফিরতে পারবেন কিনা, এমন অবস্থাতেই তাকে সারাটা জীবন কাটাতে হবে কিনা, সংসারে তাকে বেঁধে ফেলা হচ্ছে কিনা— এমন অহেতুক ভবিষ্যত সংক্রান্ত সমস্ত চিন্তা তার মাথায় চলে আসে। সেখান থেকে নিজেকে বিরত রাখতে ব্যস্ত থাকুন।
কিছু প্রশ্নের উত্তর রাখুন নিজের কাছে-
গর্ভকালীন নানারকম প্রশ্ন আপনার মাথায় আসতে পারে। এসব প্রশ্নের উত্তর সেসময় আবেগ দিয়ে হয়তো আপনি ভাবছেন। কিন্তু বাস্তবে, সেগুলোর উত্তর মোটেও অতটা হতাশাজনক নয়। নেতিবাচক চিন্তাকে আটকাতে কিছু প্রশ্নের উত্তর আগে থেকেই তৈরি রাখুন।
এই যেমন- আপনার সন্তান আপনাকে বাইরের পৃথিবী থেকে আলাদা করে দিচ্ছে না তো? নিজেকে আগে থেকেই জানিয়ে রাখুন যে, এই সময়টা কিছুদিনের। আর সন্তান নারীর দূর্বলতা নয়, শক্তি। তাই এমন চিন্তার কোন কারণই নেই।
সন্তান একজন নারীকে পূর্ণতা দেয় কিনা তা নিয়ে নানাজনের নানা মত থাকতেই পারে, তবে এটা ঠিক যে, সন্তান জন্মদানের আগের সময়টুকু সব নারীর জন্যই খানিকটা হতাশা, আনন্দ, আশঙ্কা আর উদ্বিগ্নতার মিশ্রণ। এই সময়ে আপনার বাড়তি একটু মানসিক চাপ পরবর্তী সময়ে আপনার সন্তানের উপরে নেতিবাচক ছাপ ফেলতে পারে।
একজন মা কখনোই চান না নিজের সন্তানের কোন ক্ষতি হোক। নিশ্চয় আপনিও চান একটি সুন্দর ও সুস্থ শিশু। তাই নিজের অনাগত সন্তানের সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে উপরে উল্লেখ করা কৌশলগুলো মেনে চলুন এবং নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুন।