২০১৯ বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের জন্য কেমন হবে?
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:৪৫ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ শুক্রবার

বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজার কয়েক বছর ধরেই বড় ধরনের উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখন স্মার্টফোন ডিভাইসের রমরমা ব্যবসা আগের মতো নেই। তবে আগামী বছর স্যামসাং ও হুয়াওয়ের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র আকার ধারণ করবে বলে মনে হচ্ছে। এর সুবাদে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনের দেখা মিলতে পারে। খবর ইয়াহু টেক।
মোবাইল ডিভাইস কেন্দ্রিক উদ্ভাবন ঘাটতির কারণে স্মার্টফোন বাজার খারাপ সময় পার করছে। তবে ডিভাইস নির্মাতারা এরই মধ্যে বেশকিছু উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রদর্শন করেছে, যেগুলো আগামী বছর বাজারে দেখা যাবে। হ্যান্ডসেট কেন্দ্রিক উদ্ভাবনী প্রযুক্তি উন্মোচনের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং ও চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে টেকনোলজিস লিমিটেডকে এগিয়ে রাখা হচ্ছে। হ্যান্ডসেট ডিভাইস বাজারকে আগের অবস্থানে ফেরাতে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এ দুই প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি ফোল্ডেবল স্মার্টফোন আনতে কাজ করছে অন্য ডিভাইস নির্মাতারাও।
বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে এক বছর আগে আইফোনের দশকপূর্তি সংস্করণ ‘আইফোন টেন’ দিয়ে কিছু উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল। তবে আইফোনের চলতি বছরের তিন সংস্করণে তেমন বড় কোনো পরিবর্তনের দেখা মেলেনি। আগামী বছরের সংস্করণগুলোয়ও সৃজনশীল কোনো প্রযুক্তির দেখা মিলবে না বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে আগামী বছর প্রতিযোগিতা হবে স্যামসাং ও হুয়াওয়ের মধ্যে।
বিশ্বব্যাপী কয়েকটি বাজারে টেলিকম সরঞ্জামের নিরাপত্তা নিয়ে সংকটে পড়েছে হুয়াওয়ে। এর পরও চলতি বছর বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে ডিভাইস সরবরাহে অ্যাপলকে হটিয়ে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি বার্ষিক স্মার্টফোন সরবরাহের খতিয়ান প্রকাশ করেছে হুয়াওয়ে। এতে দেখা যায়, চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটির ডিভাইস সরবরাহ প্রথমবারের মতো ২০ কোটি ইউনিট ছাড়িয়ে গেছে। তবে ডিভাইস সরবরাহে এখনো স্যামসাংয়ের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে হুয়াওয়ে।
স্যামসাং বার্ষিক ডিভাইস সরবরাহের খতিয়ান এখনো প্রকাশ করেনি। তবে চলতি বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকেই এর ডিভাইস সরবরাহ ২২ কোটি ৩০ লাখ ইউনিট ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ বছরের প্রথম নয় মাসেই ডিভাইস সরবরাহে হুয়াওয়ের বার্ষিক সরবরাহকে অতিক্রম করেছে স্যামসাং।
হুয়াওয়ের সিইও রিচার্ড ইয়ু গত অক্টোবরে ফোল্ডেল স্মার্টফোন নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছিলেন। সর্বশেষ গত মার্চে হুয়াওয়ের ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের পেটেন্ট ডায়াগ্রাম প্রকাশ হয়। হুয়াওয়ের ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের নকশা অনেকটা বইয়ের মতো, যা ফোল্ড খুলে বড় আকৃতির ট্যাবলেট ডিভাইস হিসেবে ব্যবহারের সুবিধা মিলবে। সারফেস বুক ২-এর মতো কবজা দ্বারা এর স্ক্রিন যুক্ত থাকবে।
অন্যদিকে স্যামসাং ফোল্ডেবল স্মার্টফোন আনতে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের একটি অফিশিয়াল টিজার প্রকাশ পেয়েছে। আগামী বছরই এ ডিভাইস উন্মোচন করা হবে। বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে আসন্ন গ্যালাক্সি এক্স ফোল্ডেবল হ্যান্ডসেটটি ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি ওয়েবসাইট টিথ্রির তথ্যমতে, গ্যালাক্সি এক্সে দুটি নয়, তিনটি ডিসপ্লে থাকবে। এর সুবাদে ডিভাইসটি স্মার্টফোনের পাশাপাশি ট্যাবলেট ডিভাইস হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এর সম্মুখে ৩ দশমিক ৫ ইঞ্চির দুটি স্ক্রিন থাকবে, যা ফোল্ড খুলে ৭ ইঞ্চি ট্যাবলেট ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করার সুবিধা মিলবে। ডিভাইসটির ব্যাক প্যানেলে ৩ দশমিক ৫ ইঞ্চির তৃতীয় ডিসপ্লে থাকবে, ভাঁজ করা অবস্থায়ও এ স্ক্রিনে ডিভাইস অ্যাক্টিভিটি দেখা যাবে। অর্থাৎ স্যামসাংয়ের এ ডিভাইস জটিল বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহার উপযোগী হবে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে (এমডব্লিউসি) গ্যালাক্সি এক্স উন্মোচন করা হতে পারে।
ডিভাইস নির্মাতাদের ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের কয়েকটি পেটেন্ট কাঠামো দেখে মনে করা হচ্ছে, ফোল্ডেবল স্মার্টফোন উন্নয়নে হিনজ বা কবজা ডিজাইন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ডিভাইসগুলো গেম চেঞ্জার হবে। কারণ ফোল্ডেবল ডিভাইসে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের সব সুবিধাই মিলবে।