মঙ্গলবার   ২৮ অক্টোবর ২০২৫   কার্তিক ১২ ১৪৩২   ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্যায়াম ও ডায়েট ছাড়াই কমিয়ে ফেলুন ওজন!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৪৮ পিএম, ৭ আগস্ট ২০১৯ বুধবার

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে স্বাস্থ্যবান ও মানানসই থাকা খুব জরুরি। তবে ব্যায়াম ও ডায়েট ছাড়া ওজন কমানোর কিছু সহজ উপায় আছে। যেগুলো নিয়মিত অনুশীলন করলে ওজন নিয়ন্ত্রিত হবে এবং মানসিক প্রশান্তি আসবে। এ কাজগুলো করার জন্য বাড়তি কোনো কিছু করতে হবে না। এসব হাতের কাছেই কাজগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের অংশ।

ওজন কমানোর সঙ্গে সঙ্গে ফিটনেস ধরে রাখতে শারীরিক পরিশ্রম করা প্রয়োজন। এটা শরীরকে আরো কর্মক্ষম করে, মানসিক অশান্তি-দুশ্চিন্তা দূর করে, হৃদযন্ত্রের অসুখ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, কিছু ক্যান্সার এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে ফেলে। চলুন দেখে নেয়া যাক কোন কোন কাজগুলো করলে সহজেই ওজন কমানো যায়-

গৃহস্থলী কাজকর্ম
মেয়েদের জন্য ঘরে বসে ওজন কমানোর সবচেয়ে ভাল উপায় হল, বাসার সকল কাজ নিজের হাতে করা। এটা ক্যালরি খরচ করার সহজ কিন্তু কার্যকরী পদ্ধতি। ঘর মোছা, রান্না ঘরের যাবতীয় কাজ করা, কাপড় ধোয়াসহ সারা বাসা সব সময় পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি করুন। এতে আপনার ওজন কমার পাশাপাশি মনও ভাল থাকবে। ফলে দাম্পত্য জীবন অনেক সুখের হবে।

 

নিয়মিত খেলাধুলা করা
খেলাধুলার মধ্যে বাইরে খেলতে হয় এসব খেলা দ্রুত ক্যালরি পুড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, হাইকিং, সারফিং, হকি, ইত্যাদি পরিশ্রমের খেলা। এগুলো নিয়মিত খেললে মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি শরীরকে সুগঠিত করে এবং চিত্তবিনোদন প্রদান করে।

বাগান করা
বাগান করা অনেকের প্রিয় শখ। এটা ক্যালরি খরচ করতেও দারুণ সাহায্য করেন। ৩০ মিনিট বাগানের কাজে আপনি খুব সহজে ২০০ থেকে ৩০০ ক্যালরি খরচ করতে পারেন। সপ্তাহে কয়েকদিন পুরো বিকেলটা বাগানের কাজে খরচ করুন। এর মাধ্যমে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পারবেন। এটা মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

যোগ ব্যায়াম করা
নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করুন। যোগ ব্যায়ামের তিনটি প্রধান আসন আসানাস, ধ্যান ও প্রানামগুলো সঠিকভাবে অনুশীলন করতে হবে। নিয়মিত ২০ থেকে ৩০ মিনিট যোগ ব্যায়ামের ফলে ওজন কমবে পাশাপাশি মনও প্রফুল্ল থাকবে।

 

সাইকেল চালানো
সাইকেল চালানো খুব কার্যকরী একটি ব্যায়াম। এটা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি শরীরের নিচের অংশের মাংসপেশিগুলোকে শাক্তিশালি করে। এছাড়াও এটা ফুসফুসকে আরো বেশি অক্সিজেন নিতে কার্যক্ষম করে তোলে। সাইকেল চালানো খুব মজার এবং পরিবেশ বান্ধব একটি কাজ। এর মাধ্যমে নতুন নতুন স্থান সম্পর্কে জানা যায়।

নাচানাচি করা
নাচানাচি এক ধরনের শারীরিক কসরত। এর মাধ্যমে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো নাড়ানাড়ি এবং কর্মতৎপর করতে হয়। বিশেষকরে বেলি ড্যান্স চর্বি কমাতে খুব ফলপ্রসূ। নিয়মিত নাচানাচি করার ফলে ওজন বাড়ার কতিপয় কারণ অকার্যকর হয়ে পরে এবং কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমিয়ে রক্তচাপকে স্বাভাবিক করে।

নিয়মিত হাঁটাচলা বা জগিং করা
সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন নিয়ম করে ৪০ থেকে ৬০ মিনিট জোরে হাঁটুন। এটা শরীরে জমে থাকা চর্বি গলিয়ে ফেলে এবং মেটাবলিজমকে উন্নত করে। দৈনিক ৪০ মিনিট জোরে হাটলে আনুমানিক ১৭০ ক্যালরি খরচ হয়। পার্ক বা খোলা মাঠ হাঁটাহাঁটি বা জগিং করার জন্য সব চেয়ে ভাল স্থান। এখানে প্রচুর আলো-বাতাস পাওয়া যায়। অল্প দুরত্বে রিক্সা বা যানবাহন না নিয়ে হেটে যান, কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে হেটে যান, ফোনে কথা বলার সময় বা গান শোনার সময় হাঁটতে পারেন। নিয়মিত হাঁটলে অথবা জগিং করলে হার্টের সমস্যা, স্তন ক্যান্সার, কলন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়াও এতে আবেগ-অনুভুতি এবং মানসিক স্বাস্থ্যে পজিটিভ প্রভাব পরে।

 

সাঁতার কাটা
সাঁতার কাটা আরেকটি ওজন কমানোর কার্যকরী উপায়। যত বেশি সময় এবং বেশি তৎপরতার সঙ্গে সাঁতার কাটবেন তত বেশি ক্যালরি খরচ হবে। প্রতি ১০ মিনিট উচ্চ তৎপরতার সাঁতার কাটলে ১০০ ক্যালরি খরচ হয়। এছাড়াও এটা মনে প্রশান্তি বয়ে আনে, ধৈর্য বা সহ্যক্ষমতা বাড়ায়, মাংসপেশিকে শাক্তিশালি করে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা অনেক গুন বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ ও সুখি জীবনযাপন করতে দৈনিক ৩০ মিনিট সাঁতার কাটুন।

দরি লাফ বা স্কিপিং করা
ওজন কমানোর জন্য দড়ি লাফকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এটা শরীরের সব জায়গার চর্বি কমাতে সক্ষম। ১০ মিনিট দড়ি লাফ দিলে ১০০ ক্যালরি খরচ হয়। দড়ি লাফ দেয়ার সময় মেরুদণ্ড ও হাটু সোজা রাখতে হবে। এটা ওজন কমানোর পাশাপাশি হার্ট, ফুসফুস, হাড় কে শক্তিশালী করে এবং পায়ের শক্তি বাড়ায়।