বৃহস্পতিবার   ১৫ মে ২০২৫   বৈশাখ ৩১ ১৪৩২   ১৭ জ্বিলকদ ১৪৪৬

হার দিয়ে টাইগারদের সিরিজ শুরু

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১১:২৬ এএম, ২৭ জুলাই ২০১৯ শনিবার

বাংলাদেশ-শ্রীলংকা সিরিজের প্রথম খেলায় লংকানদের কাছে ৯১ রানের হার দিয়ে মিশন শুরু করল টাইগাররা।

প্রথম ওয়ানডেতে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৯১ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারিয়েছে শ্রীলংকা। এই জয়ে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো লংকানরা। নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয় দিয়েই উদযাপন করলেন ক্রিকেট লিজেন্ড লাসিথ মালিঙ্গা।

 

 

শুরুতে ব্যাট করে ৩১৪ রান করে শ্রীলংকা। জবাবে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন তামিম ও সৌম্য। নিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নামা মালিঙ্গা প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন টাইগার শিবিরে। দারুণ এক ইয়োর্কারে কোন রান না করেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন তামিম ইকবাল। 

 

সৌম্য ও মিথুন মিলে একটি বড় পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। প্রদীপের বলে ১০ রান করে আউট হন মিথুন। তারপরই মালিঙ্গার বলে বোল্ড হয়ে মিথুনের দেখানো পথে হাটেন সৌম্য। করেন ২২ বলে ১৫ রান।

দলের দাবী মিটিয়ে এদিন ব্যর্থ রিয়াদও। লাহিরু কুমারার বলে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে মাত্র ৩ রান করেন তিনি। মাত্র ৩৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে টাইগাররা।

বিপর্যয়ের মুখে দলের হাল ধরেন সাব্বির ও মুশফিক। দুজনের ১১১ রানের পার্টনারশিপে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্ত এমন সময়েই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন সাব্বির। ডি সিলভার বলে ৬০ রান করে আউট হয়ে যান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

ভুল বোঝাবুঝিতে ১২ রানে মোসাদ্দেক আউট হওয়ার পর ২ রানের বেশি করতে পারেননি মিরাজও। শেষ ভরসা হিসেবে ৬৭ রান করা মুশফিক আউট হয়ে গেলে জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় টাইগারদের। শেষদিকে শফিউল, রুবেল ও মুস্তাফিজ হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেন। ৮ ওভার বাকী থাকতে ২২৩ রানেই অল আউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। 

 

বিদায়ী ম্যাচে ৩ উইকেট নেন মালিঙ্গা। সমান সংখ্যক উইকেট শিকার করেন প্রদীপও।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলংকান দলপতি করুনারত্নে। লংকানদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন করুনারত্নে ও আভিস্কা ফার্নান্দো। শুরু থেকে দেখে খেলার চেষ্টা করেন ২ ব্যাটসম্যান। তবে টাইগারদের বেশিক্ষণ অপেক্ষা করাননি শেষ মুহূর্তে স্কোয়াডে আসা পেসার শফিউল ইসলাম। ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সৌম্যের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান আভিস্কাকে। ৭ রান করেন এই লংকান ওপেনার। এরপর কুশল পেরেরা ও করুনারত্নে মিলে শুরু করেন পালটা আক্রমণ। দুজনের সম্মিলিত আক্রমণে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। মাঝে শফিউলের বলে কুশল পেরেরাকে আউট দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউয়ের কল্যাণে বেঁচে যান তিনি। 

 

 

মাত্র ১২ ওভারেই ৯৭ রানের পার্টনারশিপ করেন করুনারত্নে ও পেরেরা। ভালো খেলতে থাকা করুনারত্নকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু দেন মিরাজ। ৩৬ রান করা লংকান ক্যাপ্টেনকে মুস্তাফিজুরের তালুবন্দী করে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান তিনি। এরপর দুই কুশল মিলে ছড়ি ঘোরাতে থাকেন টাইগার বোলারদের ওপর। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা কুশল পেরেরা তুলে নেন ব্যক্তিগত পঞ্চম শতক। তাকে আউট করে শতরানের জুটি ভাঙ্গেন পার্ট টাইমার সৌম্য। সঙ্গীর বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেননি কুশল মেন্ডিসও। রুবেলের বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। 

দ্রুত ২ উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন এঞ্জেলো ম্যাথিউস ও লাহিরু থিরিমান্নে। তাদের ৬০ রানের জুটিতে আবারও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ঝুকে যায় শ্রীলংকার দিকে। মুস্তাফিজের বলে ২৫ রানে আউট হন থিরিমান্নে। থিসারা পেরেরাকে থিতু হতে দেননি শফিউল। মাত্র ২ রানেই সৌম্যের ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। 

 

ম্যাথিউস ও ধনঞ্জয় ডি সিলভা মিলে দলীয় ৩০০ রান পার করেন। দা ফিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৪৮ রান করেন ম্যাথিউস। তার জায়গায় ব্যাট হাতে নামেন শেষ ম্যাচ খেলতে নামা লাসিথ মালিঙ্গা। ইনিংস শেষে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। 

বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন শফিউল ইসলাম, ২ উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজুর রহমান। 

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

শ্রীলংকা ৩১৪/৮ (৫০ ওভার)
কুশল পেরেরা ১১১, ম্যাথিউস ৪৮
শফিউল  ৬২/৩, মুস্তাফিজ ৭৫/২ 

বাংলাদেশ ২২৩ (৪১.৪ ওভার)
মুশফিক ৬৭, সাব্বির ৬০
মালিঙ্গা ৩৮/৩, প্রদীপ ৫১/৩

ফলাফলঃ শ্রীলংকা ৯১ রানে জয়ী।
ম্যান অফ দা ম্যাচঃ কুশল পেরেরা।