শীতের ছুটিতে খাওয়াদাওয়া
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৪:৩৫ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

ব্যস্ত নগরবাসী এখন বেশ ছুটির আমেজে রয়েছে। টানা তিনদিনের ছুটি। এরই মধ্যে চলছে শীতের আনাগোনা, সেই সঙ্গে পৌষ মাস চলে এলো চোখের পলকে। এই শীত আর ছুটি- দুই মিলে আপনার সময়টা নিশ্চয়ই মন্দ কাটছে না। অলসতায় সকাল থেকে দুপুর কাটছে, কাজের চাপ নেই, বিশ্রাম নিতে পারছেন, ঘোরাফেরা, গেট টুগেদারের পরিকল্পনা তো চলছেই। কিন্তু এই যে শীতের মাঝে আরামের ছুটি পেলেন, বিশেষ কিছু খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করবেন না তা তো হয় না।
শীত মানেই বাঙালি সমাজে বাহারি ভিন্ন পদের খাওয়া দাওয়া। ভোজনরসিকরা পুরো শীতের সময়টাকেই রকমারি খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনে মন দেন। আর সঙ্গে যেহেতু কিছুটা ছুটি পেলেন, খাওয়া-দাওয়া নিয়ে আরেকটু ভাবুন। বাসায় বন্ধু, আত্মীয় আর সহকর্মীদের নিয়ে গেট টুগেদার করে ফেলুন। বা পরিবার নিয়েই বিশেষ খাওয়া দাওয়া সেরে ফেলুন-
তাজা শাকসবজি, ফল আর পিঠা শীতের মূল আকর্ষণ। কে কে খাবে, কয়জন আসবে, অতিথি আছে কিনা- সেগুলো ভেবেই মেন্যু ঠিক করে ফেলুন। ছুটির দিনে নাশতার সময়ে তাওয়ায় সেঁকে নেওয়া গরম আটার রুটির বা ছিটা রুটির সঙ্গে গরু বা খাসির নেহারি বা পায়া ভালো লাগবে। নান কিংবা পরোটাও রাখতে পারেন। এর সঙ্গে একটু ঘন ডাল আর পাতলা করে সবজিও দারুণ লাগে। আপনি চাইলে সবজি দিয়েও পরোটা বানাতে পারেন। ফুলকপি, নতুন আলু দিয়ে সবজি ভাজির সঙ্গে ধনেপাতা দিয়ে দারুণ নাস্তা সেরে নিতে পারেন।
সকালের আর সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবে সদ্য চুলা থেকে নামানো ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, গুড় বা খেজুরের রসে তৈরি নানা ধরনের পিঠা সকালের নাশতায় বাড়তি স্বাদ এনে দিতে পারে।
গরমের সময়ে খাওয়া আর হজম নিয়ে একটু বেশি চিন্তা করতে হয়। কিন্তু শীতের সময়ে খেয়েদেয়ে আর হজমে তুলনামূলক আরামবোধ হয়। শীতের সবজি দিয়ে পোলাও বা কিমা মটর পোলাও বানিয়ে ফেলতে পারেন। বাঁধাকপি ভাজি বা মাংস দিয়ে ভুনা, সঙ্গে ধনেপাতা আর মটরশুটি- দারুণ স্বাদ এনে দেবে।
মাছের মধ্যে বোয়াল মাছের দোপিঁয়াজি, শোল বা কই মাছের ঝুরিও করতে পারেন। আর ছোট যেকোনো মাছ টমেটো, নতুন আলু আর ধনেপাতার তরকারি তো আমাদের বাঙালিদের রসনাবিলাসের অন্যতম অনুষঙ্গ।
অন্য মাংসের তুলনায় এসময় যেহেতু হাঁস বেশি ভালো লাগে, তাই এর মাঝে হাঁস ভুনা করে ফেলতে পারেন। একটু আয়োজন করে সেমাই পিঠা বা চালের গুড়ার রুটি বানিয়ে ফেলুন। রাতের খাবারে সবাইকে নিয়ে খেয়ে ফেলুন মজাদার এই খাবারটি।
শীতের এই সময়ে বিভিন্ন শাক পাওয়া যায়। এই যেমন বুটের শাক, ছোলার শাক, মটর শাক, খেসারি শাক, পালংশাক, কলাইয়ের শাক। সবজি চপ বা সবজি কাটলেট, সবজির কোরমা, পাবদা, পুঁটি, কাজলি, রুই বা কাতলা মাছ যোগ করে সুস্বাদু পদ বানিয়ে ফেলুন।
মটরশুঁটি আপনি সব রান্নায় দিতে পারেন। পেঁয়াজ দিয়ে ভাজা মটরশুঁটি আপনি আর আপনার পরিবারের জন্য নতুন রেসিপি হতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা এটা বেশ পছন্দ করবে।
সন্ধ্যায় সবাই মিলে গরম গরম স্যুপ দিয়ে রেস্টুরেন্টের আয়োজন করে ফেলতে পারেন। বিভিন্ন স্যুপ যেমন- পালংশাকের স্যুপ, টমেটো স্যুপ, সবজি স্যুপ সন্ধ্যায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারেন। ছুটি আর শীতের আবহে আপনার সন্ধ্যাকে এটি চাঙা করে তুলতে পারে। রাতে চাইলে দুপুরের মতোই কোনো আইটেম বা আরেকটু ভারী কোনো আইটেম রাখতে পারেন। সবজি পোলাও, কিমা মটর পোলাওয়ের বাইরে সবজি বিরিয়ানি বা মটরশুঁটি পোলাও রাখতে পারেন। টমেটো, ফুলকপি বা বাঁধাকপির দোলমা, রোস্ট বা কোরমা ভালো লাগবে। ফুলকপি বা ওলকপি, টমেটো দিয়ে বড় মাছের কোনো পদ করা যায়। আর এসময় বিভিন্ন সবজি বা তার খোসা দিয়ে ভর্তা বা টমেটোর চাটনি খুব জনপ্রিয় হয়। হাতে সময় আছে বলে একটু বেশি করেই বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। আর রাতের বেলায় মিষ্টির আয়োজনে গাজরের হালুয়া, ফিরনি, পায়েস, কেক, পুডিং রাখুন। পরিবারের সবাই মিলেই আয়োজন করে বানিয়ে নিন। আর উপভোগ করুন দারুণ মজাদার শীত।