শুক্রবার   ১৬ মে ২০২৫   জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩২   ১৮ জ্বিলকদ ১৪৪৬

জাতীয় নারী ক্রিকেটার চামেলীর বাঁচার আকুতি

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০১:৪৪ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৯ মঙ্গলবার

একসময়ে মাঠ কাঁপানো জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার চামেলী খাতুন বাঁচতে চায়।  বর্তমানে তিনি পার করছেন জীবনের চরম দুঃসময়।

চামেলীর শারীরিক অবস্থা দিন দিন চরম খারাপের দিকে যাচ্ছে। তার দু পা ফুলে গেছে। মেরুদণ্ডের হাড়ও চার ডিগ্রি বেঁকে গেছে। এমন অবস্থায় বাঁচার আকুতি নিয়ে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চাইলেন একসময়ের এই দাপুটে নারী ক্রিকেটার।

আর্থিক সহায়তা চেয়ে ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে পোস্ট করেছেন চামেলী। সঙ্গে বর্তমান অবস্থার কিছু ছবি, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনসহ কিছু ছবি জুড়ে দিয়েছেন।

চামেলীর ফেসবুক স্ট্যাটাস:

‘আমি চামেলী খাতুন। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সাবেক একজন খেলোয়াড়। আমি ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলেছি। খেলাকালীন সময়ে আমি ইঞ্জুরিতে আক্রান্ত হই। তাই ক্রিকেট ক্যারিয়ার দীর্ঘ করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। খেলাকালীন সময়েই আমি আনসার ভিডিপিতে চাকরিতে যোগদান করি। এখনো সেখানে আমি চাকরিরত আছি। ২০১১ এর পর আমি খেলা ছেড়ে চাকুরিতে মনোনিবেশ করি।’ 

গত বছর এর মাঝামাঝিতে আমার শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়। আমার দুই পা প্যারালাইজড হওয়ার পর্যায়ে চলে গেছিলো। তখন আমার ফেসবুক পোস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ক্রিকেট বোর্ডের নজরে আসলে তারা আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আমি বেংগালুরুতে পায়ের লিগামেন্ট সার্জারি করে আসি। তখন মোটামুটি সুস্থ হয়েছিলাম। ওখানকার ডাক্তার আমাকে এ বছরের মার্চে ফলোআপ করার জন্য ডেকেছিলো। আমার অল্প টাকার চাকরি। আর পরিবারের বৃদ্ধ মা বাবা আর স্বামী হারা বোন। চাকরির টাকায় সংসারই চলে না ভিনদেশে চিকিৎসা করা তো বহুদূরের কথা।

 

ফলোআপ এ না যাওয়ার কারণে হোক বা সেখানে চিকিৎসা তে ঘাটতির কারণেই হোক আমার অবস্থা ইদানীং আরো খারাপ হচ্ছে। আমার দুই পা ফুলে গেছে। আমার মেরুদণ্ড এর হাড় ৪ ডিগ্রী বাঁকা। আমি ঠিকমতো নড়াচড়াও করতে পারি না এজন্য। এজন্য আমি ঠিকমতো ডিউটি করতে পারছি না। আমার ডিপার্টমেন্ট আমাকে যথেষ্ট সুযোগ দিচ্ছে। আমি ঠিকমতো যেতে পারি না এবং অসুস্থ হলে তারা আমাকে বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু এভাবে আর কত! কাউকে বসিয়ে তো বেতন দেয়া যায় না। এই চাকরি চলে গেলে আমার পরিবার না খেয়ে মারা যাওয়ার উপক্রম হবে। 

এমতাবস্থায় আমি কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। ক্রিকেট অনুরাগী, ক্রিকেট বোর্ড, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আর্জি আমাকে চিকিৎসা করে সুস্থ হওয়ার জন্য একটু সহোযোগিতা করুন। নিজের জন্য যতটুক কষ্ট তার থেকে বেশি বয়স্ক মা বাবার জন্য। এই বয়সে আমি তাদের দেখাশোনা করার কথা। উলটো তারা আমাকে যত্ন করছে। আমি ঠিকমতো হাঁটতে পারি না। বেশিক্ষণ বসে থাকলে কোমড় পা ব্যাথা করে এবং পায়ে পানি আসে। দিন দিন অবস্থা আরো অবনতি হচ্ছে। যথাসময়ে চিকিৎসা না করালে হয়তো পঙ্গুত্ব বরণ করতে পারি। 

 

এখনই শারীরিক কষ্টে আমি ঠিকমতো ডিউটি করতে পারি না। আমি এখন আমার ও আমার পরিবার নিয়ে খুববেশি চিন্তিত। আমরা এক রুমে চারজন থাকি। তার অবস্থা কি তা ছবিতেই দেখতে পাচ্ছেন। আমি খুব বেশি অসহায় হয়েই মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য হয়েছি। আপনারা যদি এগিয়ে না আসেন একটা পরিবার ধ্বংস এর মুখে পড়বে। দয়া করে আমার চিকিৎসা এর জন্য আপনারা কিছু করুন। খুব বেশি কষ্ট, অসহায় অবস্থা নিয়ে আমি এই আর্জি করছি।’