শনিবার   ১৭ মে ২০২৫   জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩২   ১৯ জ্বিলকদ ১৪৪৬

এটাই আলিম দারের শেষ বিশ্বকাপ!

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:০০ এএম, ১৪ জুলাই ২০১৯ রোববার

রোববার লর্ডসে নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের মধ্যকার ফাইনাল খেলার মধ্যদিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিং থেকে  বিদায় নিচ্ছেন আলিম দার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে সম্প্রতি এমন খবর ছড়িয়েছে।

রোববার লর্ডসে আলিম দার দায়িত্ব পালন করবেন চতুর্থ আম্পায়ার হিসেবে। ফাইনালের আগেই টুইটারের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যাচ্ছে, লর্ডসের ফাইনালই হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে তার শেষ ম্যাচ।

জি.পাকিস্তান নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে লিখা হয়েছে, ‘বিশ্বকাপ ফাইনালের পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আম্পায়ারিং থেকে অবসর নিচ্ছেন আলিম দার। অন দ্য ফিল্ডে সব সময়ই সেরা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তিনি। হ্যাটস অব ইউ।’ 

আবরার মাজহার নামে একজন লিখেছেন, বিশ্বকাপ ফাইনালের পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুডবাই জানাচ্ছেন আলিম দার। থ্যাংক ইউ দার সাব, ফর ইউর সার্ভিস।’ পাকিস্তান ক্রিকেট নামে একটি আইডি থেকেও একই টুইট করা হয়েছে।

বেশ কয়েক মাস ধরেই গুঞ্জন চলছিলো অবসরে যেতে পারেন আলিম দার। তবে তখন তিনি জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপের আগে অবসরে যাবেন না। তবে, বিশ্বকাপ শেষেই যে অবসর ঘোষণা করছেন, সেটা সামাজিক মাধ্যমে তুমুলভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

এক নজরে আম্পায়ার হিসেবে আলিম দারের ক্যারিয়ার

ক্রিকেট বিশ্বের আম্পায়ারদের ভেতর আলিম দার হচ্ছেন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পরিচিত মুখ। পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জন্ম নেয়া এই আম্পায়ারের রয়েছে ক্রিকেট ইতিহাসে অনেক অনেক কীর্তি।  আইসিসির আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলের সদস্য আলিম দার। ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা জিতেছেন ডেভিট শেফার্ড ট্রফি। আম্পায়ারিংয়ে আসার আগে প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটও খেলেছিলেন আলিম দার। ডান হাতি ব্যাটসম্যান ও লেগ ব্রেক বোলিংও করতেন তিনি পাকিস্তানের লাহোর ও পাকিস্তান রেলওয়ের হয়ে খেলার সময়। 

 

 

২০০০ সালে পাকিস্তান বনাম শ্রীলংকার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে হাতে খড়ি হয় তার। গুজরানওয়ালাতে হওয়া সেই ম্যাচের পর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপে প্রথমবারের মত আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ঢাকায় হওয়া টেস্ট ম্যাচের মধ্য দিয়ে টেস্টেও যাত্রা শুরু করেন আলিম দার। 

২০০৪ সালের এপ্রিলে এক অনন্য কীর্তি গড়েন আলিম দার। প্রথম পাকিস্তানি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট আম্পায়ার প্যানেলের সদস্য নির্বাচিত হন। এর পাশাপাশি ২০০৫ ও ২০০৬ সালের আইসিসির আম্পায়ার অফ দ্য ইয়ারের জন্য মনোনিতও হয়েছিলেন। যদিও দুইবারই তিনি সায়মন টাফেলের কাছে হেরে যান। ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে শততম ওয়ানডেতে দায়িত্ব পালন করেন পাকিস্তানি এই আম্পায়ার।

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা সময়ে হুমকিও পেয়েছেন আলিম দার। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচে মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন তিনি ও ঐ ম্যাচের আম্পায়ার স্টিভ বাকনার। এছাড়া ২০০৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে অপ্রয়োজনীয়ভাবে অস্ট্রেলিয়াকে দিয়ে অন্ধকারের ভেতর তিন ওভার বোলিং করানোর জন্য তাকে ৪ ম্যাচের জন্য বহিষ্কারও করা হয়।

 

 

এছাড়া, ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বনাম ভারতের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে বিতর্কিত নো বলের সিদ্ধান্ত দেওয়ার ম্যাচেও তিনি আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। যেটা নিয়ে সে সময় তাকে বয়কট করারও হুমকি দেয়া হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। 

২০১১ বিশ্বকাপের সকল আম্পায়ারদের থেকে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ২০ আম্পায়ারের ভেতর তিনিও ছিলেন একজন। এবারের ২০১৯ বিশ্বকাপেও মোট ১৫ জন আম্পায়ারদের ভেতর আলিম দার হচ্ছেন অন্যতম। 

আম্পায়ারিং করে পুরস্কারও কম পাননি আলিম দার। ২০০৯-২০১১ সাল পর্যন্ত টানা তিন বছর আইসিসির সেরা আম্পায়ার হয়েছিল আলিম দার। এছাড়া পাকিস্তানের সরকার কর্তৃক প্রেসিডেন্ট এওয়ার্ডও পেয়েছেন আলিম দার।