যে বিশ্বকাপের কথা ভুলতে চাইবে বাংলাদেশ
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:১১ এএম, ৫ জুলাই ২০১৯ শুক্রবার

১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মহাকাব্যিক জয়ের পর ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্ন ও আশা সবই বেড়ে যায় সবার। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ক্রিকেটের পালে লাগে বাড়তি হাওয়া। ক্রিকেটের কুলীন গোত্রে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ নিজেদের পরবর্তী বিশ্বকাপ খেলতে যায় ২০০৩ সালে।
ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য বাংলাদেশের এই বিশ্বকাপের পারফরমেন্স নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।
পাকিস্তানকে হারানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শেষ করে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ মিশন। পরবর্তী বিশ্বকাপ মিশন অর্থাৎ ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে খেলার মাঝে বাংলাদেশ খেলে ফেলে ২৬টি ম্যাচ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এর মাঝে বাংলাদেশ জিততে পারেনি একটি ম্যাচও। তবুও আগের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স মাথায় রেখে ভালো করার প্রত্যাশা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় পা রাখে খালেদ মাসুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
১১ ফেব্রুয়ারি টুর্নামেন্টের দুর্বলতম দল কানাডার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে। সহজ জয়ের আশা থাকলেও অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায় বাংলাদেশ। ডারবানের কিংসমিডে খেলতে নেমে শুরুতে ব্যাট করে মাত্র ১৮০ রানে অল আউট হয় কানাডা। জবাবে মাত্র ২৮ ওভারে ১২০ রানেই শেষ বাংলাদেশ ইনিংস। হেরে যায় ৬০ রানের বড় ব্যবধানে।
প্রথম ম্যাচ হেরে চাপে থাকা বাংলাদেশ পরের ম্যাচ খেলতে নামে ১৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীলংকার বিপক্ষে। এ ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে চামিন্দা ভাসের তান্ডবে শুরুর ৩ বলেই ৩ জন আউট হয়ে যান। প্রথম ওভারেই ৪ উইকেট হারানোর পর আর ঘুরে দাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ।
অলক কাপালী, খালেদ মাসুদ ও মাশরাফির প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ১২৪ রান করতে সমর্থ হয় টাইগাররা। এই রান করতে কোন বেগই পেতে হয়নি লংকান ওপেনারদের। তারা ম্যাচ জিতে নেয় ১০ উইকেটে।
১৮ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ম্যাচ নিয়ে তেমন কোন প্রত্যাশা ছিলো না। শুরুতে ব্যাট করে ২৪৪ রানের বড় সংগ্রহ করার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ মূলত ম্যাচ জয়ের অপেক্ষাতেই ছিল। কিন্ত বাংলাদেশের ইনিংসের ৮ ওভার হওয়ার পর বেরসিক বৃষ্টি আসায় আর খেলা হয়নি। ফলে আরেকটি ম্যাচ হারার লজ্জা থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় টিম টাইগার্স। ব্লুমফন্টেইনে শুরুতে ব্যাট করে ১০৮ রানে অল আউট হওয়ার পর আরো একবার ১০ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই বলতে গেলে পারফরমেন্সের বিচারে স্কোরবোর্ডে ভালো কিছু রান তোলে বাংলাদেশ। মোহাম্মাদ আশরাফুলের পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস দলকে জয়ের মুখ দেখাতে যথেষ্ট ছিলোনা। মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৪ ওভারেই জয় লাভ করে কিউইরা।
টুর্নামেন্টে কোন ম্যাচ না জেতা বাংলাদেশ ১ মার্চ আলোচ্য বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামে। সব ম্যাচ হারার পরেও দুর্বল কেনিয়ার বিপক্ষে জয় প্রত্যাশা করা অতিরঞ্জিত ছিলোনা। কিন্ত তাদের কাছেও ৩২ রানে হেরে কোন ম্যাচ জয়ের মুখ না দেখে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে বাংলাদেশ দল।
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ হওয়ায় অনেক আশা নিয়েই খেলতে যায় বাংলাদেশ দল । কিন্ত ৬ ম্যাচের কোনটিতেই জয়ের মুখ না দেখে হতাশ হয়ে ফিরতে হয় তাদের। পারফরমেন্সের দিক দিয়ে যা হয়ে আছে বাংলাদেশের সবচেয়ে খারাপ বিশ্বকাপ।
২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের স্কোয়াড :
খালেদ মাসুদ (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), আকরাম খান, আল শাহরিয়ার, অল্পল কাপালী, এহসানুল হক, হাবিবুল বাশার, হান্নান সরকার, খালেদ মাহমুদ, মঞ্জুরুল ইসলাম, মাশরাফি মর্তুজা, মোহাম্মাদ আশরাফুল, মোহাম্মাদ রফিক, সানোয়ার হোসেন, তালহা জুবায়ের, তাপশ বৈশ্য, তুষার ইমরান।