যন্ত্রপাতি প্যাকেটবন্ধী, পরীক্ষা করাতে হয় ক্লিনিকে
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:২১ পিএম, ১৬ জুন ২০১৯ রোববার

গাজীপুরের টঙ্গীর মাছিমপুর এলাকায় ৫০ শয্যার টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের নামকরণ হয় শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল। ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালের ভবন উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ভবন উদ্বোধন হলেও ৫০ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। এতে করে এ হাসাপাতালের চিকিৎসা সামগ্রী এবং যন্ত্রপাতি এখনো প্যাকেটবন্ধী হয়ে আছে।
এই সুযোগে দালালরা আছেন সক্রিয়। তাদের সঙ্গে আছেন কিছু অসাধু ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার ও কন্টাক্ট বা রাজনৈতিক ভাবে নিয়োগকৃত কিছু কর্মচারী। তারা এই হাসপাতালের গেটের দক্ষিণ পাশে আবেদা মেমোরিয়াল হাসপাতাল, নিউলাইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ট্রমা সেন্টার, ফাতেমা জেনারেল হাসপাতাল, সন্ধানী ডায়াগনস্টিক, ঢাকা কিংস হাসপাতাল, সেবা হাসপাতাল, তুরাগ হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীদের নিয়ে যাচ্ছেন।
হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ঠিক থাকলেও রোগীদের উপকারে আসছে না। রোগীরা টাকা খরচ করে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিচ্ছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেবা। ফলে কম টাকায় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আনা হলেও রোগীদের কোন উপকারে আসছে না। রোগীরা অধিক টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। হাসপাতালে এক্স-রে, ইসিজি, ইকো মেশিন সচল থাকার পরও এসব অকার্যকর বলে দালালরা রোগীদের হাসপাতাল থেকে ভাগিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া হাসপাতালে রোগী আনা নেয়ার জন্য দুইটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও ড্রাইভার আছেন একজন। ফলে সচল অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা থেকে। রোগীদের অনেক ওষুধই বাইরে থেকে কিনতে হয়। হাসপাতাল থেকে জ্বর ঠান্ডা ও এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ ছাড়া তেমন কোন ওষুধ সরবরাহ নেই বললেই চলে।
এ হাসপাতালে ৬০ জন ডাক্তারসহ আড়াই শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও এখানে ডাক্তারসহ মাত্র ৭৬ জন আছেন। এতে করে রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা মিলছে না। এরমধ্যে আবার অনেক ডাক্তার ও কর্মকর্তা কর্মচারী অনুপস্তিতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ডাক্তাররা বেশির ভাগই প্রাইভেট ক্লিনিকে বসেন। সেখানে তারা রোগী দেখেন। আবার রয়েছে রিপ্রেজেনটেটিভ অত্যাচার।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কমর উদ্দিন জানান, হাসপাতালের ২০১৯ সালে এর অর্থনৈতিকভাবে বরাদ্ধ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যা আগামী অর্থ বছরে তার বরাদ্ধ পাওয়া যাবে। যন্ত্রপাতি ও বেড ক্রয় করা হবে। এরইমধ্যে ডিজিটাল এক্স-রে ও আল্টাসোনোগ্রাম মেশিন ক্রয় করা হলেও তা ফিটিং করা হয়নি। ৫০ শয্যার স্টাফ দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করছি, প্রশাসনকেও জানিয়েছি। হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসক আছে ৫০ শয্যারই। ফলে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক যুক্ত হলে আমরা আরো ভালো সেবা দিতে পারবো।