ওজন, বদভ্যাস ও শ্লেষ্মা সারবে গোলমরিচে!
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:৫২ এএম, ২৬ মে ২০১৯ রোববার

প্রতিটি খাবারে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি রয়েছে অপকারিতাও। এই যে ধরুন, ভিটামিন সি যুক্ত ফলমূল, এতে যেমন রয়েছে উপকারিতা তেমনি অধিক খাদ্যাভ্যাসে হয়ে যেতে পারে বড় ধরনের কোনো রোগও। এই ধরনের যত খাবার আমরা গ্রহণ করি, প্রতিটি খাবারে গুণের পাশাপাশি ক্ষতির সম্ভাবনাও থাকে। তাই খাদ্য গ্রহণের সময় সবার সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
কোনো খাদ্য অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমিত খাওয়া প্রয়োজন। তেমনই আরেকটি খাবার হলো গোলমরিচ। যেটি আমরা বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খায়। তবে এই খাবারেরও যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি রয়েছে অপকারিতা। তবে আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় গোলমরিচের উপকারিতা নিয়ে। খাবারে একটুখানি গোলমরিচের গুঁড়া পড়লেই অনেক বিস্বাদ খাবারও খেয়ে ফেলা যায়। বিশেষ করে স্যুপ কিংবা সিদ্ধ ডিম, উপরে একটু গোল মরিচ ছড়িয়ে নিলে স্বাদই বেড়ে যায়। আবার কোনো চাইনিজ রেস্তোরাঁয় খেতে গেলেও নুডলসের সঙ্গে একটু গোলমরিচ না হলে চলেই না।
চলুন দেখে নেয়া যাক এছাড়া আর কি উপকারিতা রয়েছে এই খাবারে। ভাবছেন, শুধু স্বাদ বাড়ায় গোল মরিচ? তা কিন্তু না। গোলমরিচে এমন আরো অনেক গুণাবলী রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে মহৌষধির মতো কাজ করে। তাই কেবল স্বাদ নয়, স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেও খাবারে গোলমরিচ ব্যবহৃত হয় বড় বড় চাইনিজ রেস্টুরেন্টে।
গোল মরিচ শুধু স্বাদের জন্য নয় বরং বিভিন্ন রোগের ওষুধও বটে। জেনে অবাক হবেন যে, সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে গোলমরিচ অত্যন্ত কার্যকরী, কিন্তু তা ছাড়াও বেশ কিছু উপকার রয়েছে এতে। আজ জেনে নিন, কোন কোন অসুখে মহৌষধির মতো কাজে লাগে গোলমরিচ? ত্বকের রোগ থাকলে তার চিকিৎসাতে কাজে লাগে গোলমরিচ।
ব্যবহারবিধি: গোলমরিচ প্রথমে গুঁড়ো করে নিন। পরে হালকা পানি মিশিয়ে স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর হয়। ফলে ত্বকে সহজে অক্সিজেন চলাচল করতে পারে এবং রক্ত সঞ্চালন হয় বাধাহীনভাবে। পিগমেন্টেশন ও অ্যাকনে দূর করতেও সাহায্য করে গোলমরিচ। এছাড়া গোটা মরিচের খোসা অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। ফলে গোলমরিচ দিয়ে খাবার বানান। শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরবে খুব সহজেই।
এদিকে, এই গোলমরিচ হজমে বেশ সাহায্য করে। যাদের খাবার হজমে সমস্যা রয়েছে, তারা খুব সহজে গোলমরিচ মিশ্রিত খাবার খেতে পারেন। কারণ এটি পেটে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরণের মাত্রা বাড়ায়। হজম ঠিক থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়ার মতো সমস্যাকে এড়ানো যায়। হজমের সমস্যা থেকে অনেক রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। ফলে সেগুলো থেকে শরীরকে রক্ষা করা যায়।
তবে শুধু রোগ নয় কিছু কিছু বদ অভ্যাস দূর করে এই গোলমরিচ। কীভাবে সেটা? যারা অতিরিক্ত মাত্রায় ধূমপান করেন তাদের জন্য গোলমরিচ খুবই উপকারী। আপনার চাইলে এর তেলের গন্ধ নিয়মিত সেবন করতে পারেন। কারণ এই গোলমরিচ তৈল বানিয়ে খেলে ধূমপানের প্রতি আসক্তি কমবে অনেকটাই। এছাড়া দাঁতে ক্যাভিটি বা ব্যথা থাকলে মুখে গোলমরিচ রাখতে পারেন। ব্যথা নিরাময় করতে এটি অনেক সাহায্য করে।
মানুষের শারীরিক আরো কিছু সমস্যা হয় নিয়মিত, যেমন নাক বন্ধ থাকা, হাঁপানি ইত্যাদি থেকে মুক্তি দিতেও গোলমরিচের জুড়ি নেই। এক কাপ গরম পানিতে এক টেবিল চামচ গোলমরিচ এবং দুই টেবিল চামচ মধু দিয়ে খেলে শ্লেষ্মা দূর হবে। সে সঙ্গে গলা ব্যথা কমবে।
শ্লেষ্মা কী? গরম-ঠান্ডায় হঠাৎ করেই সর্দি-কাশি হতে পারে। তবে আমরা এটাকে খুব একটা পাত্তা দেই না। কিন্তু এই অবস্থা দীর্ঘমেয়াদি হলে তখনই সমস্যায় পড়তে হয়। বুকে কফ জমে শ্বাসকষ্ট, সঙ্গে জ্বরও হতে পারে। এই বুকের কফকে মূলত শ্লেষ্মা বলা হয়। এই অবস্থায় গোলমরিচ খেলে শরীর গরম হয়ে ঘাম বেশি হয়। ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন কমতে থাকে। ফলে ত্বক ভাল থাকে ও ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।