প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেনের সংক্ষিপ্ত জীবনী
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৮:০৪ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার
শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটা ৫৭ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুলের স্ত্রী রাশেদা আক্তার লাজুক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী আর দুই ছেলেকে রেখে গেছেন।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আমজাদ হোসেনকে। হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শুরু থেকেই তাঁকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাসপ্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়। বাংলাদেশের বরেণ্য এই নির্মাতার শারীরিক অসুস্থতার খবর শুনে হাসপাতালে ভর্তির তিন দিনের মাথায় তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমজাদ হোসেনের উন্নত চিকিৎসার খরচ বাবদ ২০ লাখ টাকা এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বাবদ ২২ লাখ টাকা পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আমজাদ হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক নেওয়া হয়। ২৭ নভেম্বর মধ্যরাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে তিনি প্রখ্যাত নিউরোসার্জন টিরা ট্যাংভিরিয়াপাইবুনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আমজাদ হোসেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট, জামালপুর জেলায়। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। তিনি পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন।
যাত্রার শুরুটা ছিল মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর তিনি অভিনয় করেন মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে।
আমজাদ হোসেনের লেখা নাটক ‘ধারাপাত’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন সালাহউদ্দিন। এতে আমজাদ হোসেন নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। এরপর তিনি জহির রায়হানের ইউনিটে কাজ শুরু করেন।
এভাবেই দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে ১৯৬৭ সালে নিজেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। নাম ‘জুলেখা’। তার পরিচালিত ব্যাপক দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র হচ্ছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি। ১৯৮১ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত পালন করেন আমজাদ হোসেন। গুণী এই পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
