শনিবার   ২২ নভেম্বর ২০২৫   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩২   ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ফারুকীর নির্বাচনী ইশতেহার

নিউজ ডেস্ক

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:০৫ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

ভোট দেয়া আমার অধিকার। সচেতন নাগরিক হিসেবে অবশ্যই আমি ভোটকেন্দ্রে যাব এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেব। আমি সবসময়ই বলে আসছি, সবাইকে ভোট দিতে যেতে হবে। ভোট আমাদের অধিকার। যে যেই দলের সমর্থকই হন না কেন, নিজের দলকে জয়ী করতে চাইলে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে

ক’দিন বাদেই ৩০ ডিসেম্বর। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন এগোচ্ছে, আর নির্বাচনী হাওয়াও যেন খানিকটা গরম হতে শুরু করেছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রই। শুধু বিভিন্ন দলের প্রার্থীরাই নন, বরং নির্বাচন নিয়ে সরব বিনোদনজগতের তারকারাও। যেমনটা বলা যেতে পারে— জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কথা। সম্প্রতি তিনি তার ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে নির্বাচন সামনে রেখে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা তার এ স্ট্যাটাস এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে কথা হয় টকিজের।

‘অভাজনের ইশতেহার’ শিরোনাম দিয়ে সামনের বছর নতুন সরকারের কাছে কী চাওয়া, সে বিষয়ে বিশদ লিখেছেন তিনি। এখানে মূলত প্রাধান্য পেয়েছে আসছে বছরে নতুন সরকারের কাছে নির্মাতার কেমন চাওয়া, সে বিষয়টি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে ফারুকী বলেন, আসলে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন, সবার কাছেই আমার চাওয়া স্ট্যাটাসে উল্লেখিত ১৩টি দফার কথা বলেছি।

তার চাওয়া ১৩টি বিষয়ের একটি ছিল দেশীয় টিভি চ্যানেল, বিজ্ঞাপন, এবং সিনেমাবান্ধব নতুন নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে বাংলায় ডাব করা বিদেশী বিজ্ঞাপনের পরিবর্তে দেশী বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে যা করা যেতে পারে, তা হলো বিদেশী বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে অধিক কর সংযোজিত করতে হবে, যাতে প্রচারমাধ্যম নিরুৎসাহিত বোধ করে। অন্যদিকে দেশী বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রেও যাতে নামে মাত্র কর সংযোজন করা হয়, সে বিষয়েও সরকারের প্রতি চাওয়ার থাকবে।

শুধু তা-ই নয়, খ্যাতিমান এ নির্মাতার মতে, চলচ্চিত্র মাধ্যমেও সরকার প্রণীত কিছু আইনের বাস্তবায়ন ঘটানো উচিত। দেশের প্রেক্ষাগৃহে বিদেশী চলচ্চিত্র প্রচারের বিষয়টি টেনে উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, একটা সময় কলকাতার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি প্রায় ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছিল। অথচ মুম্বাইয়ে তখনো চলচ্চিত্র ব্যবসা রমরমা। সে সময় সে দেশের সরকার কর্তৃক কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। কলকাতা ও মুম্বাই যেহেতু একটি দেশেরই অংশ, সে দেশের সরকার আইন করেছিল মুম্বাইয়ের চলচ্চিত্র কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে দেখাতে হলে ২৫ ভাগ শুল্ক যোগ করতে হবে, যেখানে কলকাতার ছবির জন্য আরোপ করা হয়েছিল মাত্র ২ শতাংশ শুল্ক। ঠিক এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এ দেশের চলচ্চিত্র শিল্প বাঁচানোর তাগিদে।

ভোট দিচ্ছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুকী জানান, এটা আমার অধিকার। সচেতন নাগরিক হিসেবে অবশ্যই আমি ভোটকেন্দ্রে যাব এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেব। সেসঙ্গে পছন্দের দলকে ভোট দেয়ার বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আমি সবসময়ই বলে আসছি, সবাইকে ভোট দিতে যেতে হবে। ভোট আমাদের অধিকার। যে যেই দলের সমর্থকই হন না কেন, নিজের দলকে জয়ী করতে চাইলে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে।

উল্লেখ্য, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর দেয়া স্ট্যাটাসে মোট ১৩টি পয়েন্টে তিনি নতুন সরকারের প্রতি তার চাওয়া উপস্থাপন করেছেন। শিল্পীর কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, দেশীয় টিভি চ্যানেল, বিজ্ঞাপন এবং সিনেমাবান্ধব নতুন নীতিমালা গ্রহণ করার বিষয় থেকে শুরু করে সব ধরনের উদ্ভট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরের হাত থেকে শিল্পীকে রেহাই দিতে হবে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো সব নিয়ম-কানুন বাতিল করতে হবে, নাগরিকের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, কথা বলা এবং বিরোধিতা করার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, বিরোধী মতকে দমন-পীড়ন বন্ধ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার চাওয়া উপস্থাপন করেছেন।