বৃহস্পতিবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১০ ১৪৩২   ০৫ রজব ১৪৪৭

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় বিমান আছড়ে পড়ার মুহূর্ত

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ১০:০৩ এএম, ১০ মে ২০১৯ শুক্রবার

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পড়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। দুর্ঘটনায় ওই বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং ভেঙে তিন খণ্ড হয়ে যায়। বিমানটিতে ২৯ জন যাত্রী, দুই পাইলট ও দুজন কেবিন ক্রু ছিলেন। যাত্রীদের একজন ঢাকার রেজওয়ানা খান; যিনি একজন প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা ও  ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার মিয়ানমারে একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু বিমান দুর্ঘটনার কারণে এই মুহূর্তে তিনি ইয়াঙ্গুনের বেসরকারি এআরওয়াইইউ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিমানটি যখন রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে সেই সময়কার মুহূর্ত কেমন ছিল- সেখান থেকে তিনি তা টেলিফোনে জানিয়েছেন। বলেন, তিনিসহ অন্য যাত্রীরা প্রথম দিকে বিপদের আশঙ্কা আঁচ করতেও পারেননি।

‘আমরা তো নরমাল ছিলাম। কারণ এরকম থান্ডার-স্টর্ম [বজ্রপাত] তো অনেক সময়ই হয়।’

‘একটা সময় বিমানটি জোরে একটি ঝাঁকুনি খায় এবং তারপর আছড়ে পড়ে। তার আগে আমরা বুঝতেই পারিনি কী ঘটতে যাচ্ছে’- বলছিলেন মিয়ানমারের এআরওয়াইইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেজওয়ানা খান।


 

হাসপাতালে আহতদের নিয়ে যাওয়ার পর

হাসপাতালে আহতদের নিয়ে যাওয়ার পর

‘প্রথমে থান্ডার-স্টর্ম হচ্ছিল, পাইলট আধা-ঘণ্টার বেশি আকাশে চক্কর দিচ্ছিলেন। নামার চেষ্টা করেও নামতে পারছিলেন না, তখন অন্য দিকে ঘুরে যান। একটা সময় পাইলট ইঞ্জিন বন্ধ করে দেন বলেও জানান তিনি।

‘পাইলট একটা সময় ইঞ্জিন বন্ধ করে দেন; যে কারণে বিমানে আগুন লাগেনি বলে আমরা মনে করছি।’
 
‘বারবার বলা হচ্ছিল এক্সিট ডোর খোলার চেষ্টা করতে। আমি বিমানের পেছনের দিকে ছিলাম। আমাদের বলা হচ্ছিল আপনারা এক্সিট ডোর পুল করেন, শুরুতে পারছিলাম না। অনেক চেষ্টার পর ডানদিকেরটা পুল করতে পারলাম।’

তিনি জানান, বিমানটি আছড়ে পড়ে জোরে একটা ঝাঁকুনি লাগায় তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন। এরপর তাদের দ্রুত বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে তার মুখে সেলাই লেগেছে বলে জানান তিনি।

‘চোখে চশমা থাকায় আমার নাক কেটে গেছে, ব্লিডিং হিচ্ছল, স্টিচ লেগেছে।’ তবে তিনি মনে করেন, পাইলটের দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তায় তারা বেঁচে গেছেন।

তিনি বিমানের ফ্লাইটে মানুষের জীবনের ঝুঁকি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেন। ‘প্লেনটা আসলে দেখা উচিত। এভাবে স্কিট করলো, বাম্প করলো, এত পুরনো ফ্লাইট,...এগুলো দেখা দরকার।’
 

আহত একজন বিমানযাত্রী

আহত একজন বিমানযাত্রী

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে বুধবার সন্ধ্যায় অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পড়ে বিমান ড্যাশ-৮ । এতে আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ১৭ জনকে দেশে আনা হয়েছে। এদিকে এই দুর্ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে।