বৃহস্পতিবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১০ ১৪৩২   ০৫ রজব ১৪৪৭

পদ্মা সেতুর ১২তম স্প্যান বসছে আজ

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০১:২৪ পিএম, ৬ মে ২০১৯ সোমবার

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে বসতে যাচ্ছে আরেকটি স্প্যান। সোমবার জাজিরা ও মাওয়ার মাঝ প্রান্তে বসানো হবে ১২তম স্প্যানটি।

১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ স্প্যান ভাসমান ক্রেন দিয়ে বসানোর উদ্দেশে সকাল সোয়া ৯টায় মাওয়া প্রান্ত থেকে মাঝ প্রান্তে রওয়ানা হয়েছে। 

এটি বসালে দৃশ্যমান হবে ১৮০০ মিটারের পদ্মা সেতু। ১২তম স্প্যানটি জাজিরা- মাওয়ার মাঝ প্রান্তে ২০ ও ২১ নম্বর পিলারের ওপর বসবে। 

এছাড়া গত বছরের মাওয়া পয়েন্টে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর আরো একটি স্প্যান বসানো হয়। জাজিরা ও মাওয়ার মাজ পয়েন্টে ওই স্পেনটি বসলে পদ্মা সেতুতে ১২টি স্প্যান বসানো হবে। 

তবে এ মাসে আরো ২টি স্প্যান বসানো হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে সেতুর প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে সবকটি স্প্যান বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করা হবে। 

সোমবার সকালে মাওয়ার মুন্সিগঞ্জের কুমারভোগের বিষেশায়িত জেডি থেকে স্প্যানটি নিয়ে শক্তিশালী ভাসমান ক্রেন তিয়া নি হাউ জাজিরা ও মাওয়ার মাঝ প্রান্তের  উদ্দেশে রওনা দেয়। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় পিলারের ওপর তোলা হবে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ। গত বছর আরো একটি স্প্যান ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। এ নিয়ে দৃশ্যমান হবে এক হাজার ৮০০ মিটার। 

গত ১৮ এপ্রিল ১৩ ও ১৪নং পিলারের ওপর মাওয়া প্রান্তে বসে ৯নং স্প্যানটি। ২৩এপ্রিল ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর ১১ম স্প্যানটি বসানো হয়। 

১২তম স্পেনটি বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ আর একধাপ এগিয়ে যাবে। এ মাসে আরো দুইটি স্প্যান বসবে। 

২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর ১ম স্প্যান এবং ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান এবং ১০ মার্চ তৃতীয় স্প্যান ও ১৩ এপ্রিল ৪র্থ স্প্যান ২৯ জুন ৫ম স্প্যান বসানো হয়। 

২০১৯ সালে ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ স্প্যান ২০ ফেব্রুয়ারি ৭ম স্প্যান বসানোর হয়েছে। ২০ মার্চ ৮ম স্প্যান, ১৮ এপ্রিল ৯ম স্প্যান বসানো হয়। 

এ ছাড়া মাওয়া পয়েন্টের দিকে গত বছর আরো একটি স্প্যান ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। এ স্পেনটি তৈরি করা হয়েছে ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের ওপর বসানোর জন্য। 

নকশা জটিলতা ও পিলার তৈরি না হওয়ায় এবং ওয়ার্কশপে জায়গা না থাকায় অস্থায়ীভাবে ৪ ও ৫ নম্বার পিলারে তুলে রাখা হয় স্প্যানটি। নকশা জটিলতা কেটে যাওয়ার পর ৬ ও ৭ নম্বর পিলার তৈরি হলে স্প্যানটি সেখানে সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সেতু বিভাগ।

প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। 

এরইমধ্যে ২৩টি পিলার দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে। এ স্প্যানটি বসানোর সংবাদে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। 

প্রতি মাসেই স্প্যান বসানো হবে বলে জানিয়েছেন সেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের মুরাদ। পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। দেশের অর্থনৈতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের শহর। কলকারখানায় ভরে উঠবে এ এলাকা। শ্রমজীবী মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সর্বক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে আশা করছেন পদ্মা পাড়ের মানুষ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ৭ কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে। 

দোতলা এ সেতুর নিচতলায় চলবে ট্রেন। স্থাপন করা স্পেনগুলোয় এখন রেলের স্লাব বসানোর কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের স্পেনগুলোয় ১২৮টি স্লাব বসানো হয়েছে। পুরো সেতুর ২ হাজার ৯৫৯টি স্লাব বসানো হবে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়াডে স্প্যান ও স্লাব বসানোর কাজ চলছে।