বৃহস্পতিবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১১ ১৪৩২   ০৫ রজব ১৪৪৭

রাতভর ফণি’র আঘাত থাকবে দেশজুড়ে

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৩:৪৩ পিএম, ৩ মে ২০১৯ শুক্রবার

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ‘অতি প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় ফণির অগ্রভাগের প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে ভারতের উড়িষ্যার পূর্ব উপকূল অঞ্চল ভবেশ্নরে আঘাত হানছে ফণি। প্রভাবে রাউরকেলা ও কলকাতায় শুরু হয়েছে তীব্র বাতাস ও ভারি বর্ষণ। এছাড়া বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায়  ১৭৫ থেকে  ১৮০ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণি।

৪৩ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় ফণি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, উড়িষ্যায় আঘাত হানছে। পুরী, জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, ময়ূরভঞ্জ, গজপতি, গঞ্জাম, খুরদা, কটক এবং জাজপুর চলছে ফণির তাণ্ডব। সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করবে সুপার সাইক্লোন হ্যারিকেনে রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড়টি। রাত ১টার দিকে খুলনা ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এ সময়ে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসসহ ১০০-১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে। সারারাত পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে, এ সময়টা ক্রিটিক্যাল। তিনি বলেন, উচ্চগতির বাতাস ও দমকা হাওয়ার সময় সবাইকে নিরাপদে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণি উপকূল অতিক্রমের সময় দেশের নিচু এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এদিকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় ফণি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ২০১৩ সালের ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের মত শক্তিশালী হয়ে ফণি বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। অর্থাৎ মহাসেনের সময় যে গতি ছিল ৬০ থেকে ৯০ কিলোমিটার। তেমনি ফণিও ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশে আঘাত হানবে।

দেশের উপকূলীয় জেলা ও দ্বীপগুলোর ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ও অমাবশ্যার প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

আবহাওয়ার সবশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণির কবল থেকে দেশবাসী যেন রক্ষা পায় সে জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার দেশের সব মসজিদে বিপদমুক্তির জন্য বিশেষ দোয়ার আহ্বানও জানান তিনি।