‘ঘোড়ায় না চড়ে বাড়ি যাব না’
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০১:৫৯ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

‘দেখেছো লাইন কত লম্বা। ঘোড়ায় চড়তে হলে আধাঘণ্টা লেগে যাবে। চল চলে যাই, পরে অন্যদিন আসব।’
সোমবার বিকেলে শাহবাগে শিশুপার্কের ভেতরে আনন্দঘূর্ণির সামনে দাঁড়িয়ে একজন অভিভাবক তার আট-নয় বছরের মেয়েকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলছিলেন।
বাসায় ফিরে যাওয়ার কথা শুনেই মেয়েটি ভেউ করে কেদে উঠে বলে, ‘আমি ঘোড়ায় না চড়ে যাবই না। কদিন পরেই স্কুল খুলে যাবে। তুমিও আর নিয়ে আসবে না।’
অগত্যা ভদ্রলোক মেয়েকে নিয়ে লাইনে দাঁড়ালেন। চেয়ে দেখলেন সামনে শ’খানেক শিশু ও অভিভাবকের ভিড়। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, মেয়ের বায়না মেটাতে ২০টি টিকিট কিনলেও যে লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে তাতে টিকিট সবই রয়ে যাবে।
এত ভিড়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাত্র ১৫ টাকা প্রবেশ ফি আর ১০ টাকায় রাইডে চড়ার সুযোগ আর কোথাও নেই। তাছাড়া এখন স্কুলও বন্ধ। তাই ভিড় বেশি। তার কথার সঙ্গে সায় মেলালেন আরও কজন অভিভাবক।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি রাইডের সামনে লম্বা লাইন। সিরিয়াল ঠিক রাখতে রাইডের সামনে দাঁড়িয়ে বারবার বাঁশি বাজাচ্ছেন শিশু পার্কের কর্মচারীরা। বিপুল লোক সমাগমে খুশি পার্কের ভেতর অবস্থানকারী হকাররা। তারা হেড ফ্লাওয়ার রিং, কেউ বাদাম, চিপস, জুস, পানি, বেলুন বিক্রি করছিলেন।
রাজধানীর কলাবাগানের বাসিন্দা সোলেমান আলী বলেন, স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি গত দুই সপ্তাহ যাবত শিশুপার্কে নিয়ে আসতে বায়না ধরেছে। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিন ভিড় বেশি হয় বলে আজ নিয়ে এসেছি। কিন্তু এত ভিড় হবে ভাবতেই পারিনি।
মিরপুর থেকে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে পার্কে এসেছেন এক অভিভাবক। কিন্তু দুই ঘণ্টাতেও দুটি রাইড চড়াতে না পারায় ছেলেমেয়েরা অখুশি।
ধোলাইখাল কলতাবাজার এলাকার একটি মাদরাসা থেকে ৩২ জন ছাত্র নিয়ে এসেছেন কয়েকজন শিক্ষক। ভিড়ের কারণে রাইডে চড়তে না পারলেও ওদের আনন্দের সীমা নেই। পার্কের খোলা মাঠে ওরা মোরগ লড়াই খেলছিল।
মাদরাসার শিক্ষকরা জানালেন, ওরা কেউ ২৫/২৬ পারা কোরআন মুখস্থ করেছে, কেউ পিইসি পাস করেছে। তাই আজ ঘোরাতে নিয়ে এসেছেন।