পশ্চিমবঙ্গে ভোটে সহিংসতা, বাবুলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৯:২৮ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহনকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ও অশান্তি ছড়ালো পশ্চিমবঙ্গে। এদিন পশ্চিমবঙ্গের ৮ টি লোকসভা কেন্দ্রে চলছে ভোটগ্রহন। রাজ্যের বীরভূম ও আসানসোল কেন্দ্রে চরম উত্তেজনার মধ্যেই চলছে ভোটগ্রহন।
তবে এরমধ্যে বীরভূম ও আসানসোল কেন্দ্রেই সবথেকে বেশি অশান্তির খবর মিলেছে। এদিন সকালে বীরভুমের নানুরে ভোটদানে ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তৃণমূল ভোটারদের ভোটদানে বাধা দিচ্ছে এই খবর চাউর হতেই লাঠি হাতে বেরিয়ে আসেন গ্রামের নারীরা। ভোট কেন্দ্রের কাছে তৃণমূলের অস্থায়ী শিবিরে চালানো হয় ভাঙচুর। এমনকি গ্রামে ঢুকে তৃণমূল সমর্থকদের বাড়িতেও চড়াও হন গ্রামের নারীরা। এই নানুরের ২১৭ নম্বর বুথে ভোট দিতে যাওয়ার সময় এক বিজেপি সমর্থককে তৃনমূল আশ্রিত দুস্কৃতীরা মারধোর করার অভিযোগ ওঠে। তারপরেই গ্রাম থেকে বাঁশ ও লাঠি হাতে নিয়ে নারীরা এসে যেখানে তৃনমূলের অস্থায়ী অফিসে রান্নাবান্না হচ্ছিলো সেই রান্নার আয়োজন ভেস্তে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ঘটনাস্থলে পৌছায় বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনার জেরে ওই এলাকায় আতঙ্কে রয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা।
অন্যদিকে, এদিন সকালে ভোট গ্রহন শুরু হওয়ার পরেই আসানসোলের বারাবনির একটি বুথে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন আসানসোল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা সংগীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়। এমনকী তার গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। অভিযোগের তীর উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
এদিন সকালে বারাবনি এলাকার বুথে বিজেপির এজেন্টদের বসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান বাবুল সুপ্রিয়। বুথে ঢোকার পর তার সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ হয় পোলিং অফিসারের। এরপর বাবুল বুথ থেকে বের হতেই তৃণমূলের কর্মীরা বাবুলকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেইসঙ্গে বাবুলের গাড়ির কাচও ভেঙ্গে দেওয়া হয়।
তৃনমূলের অভিযোগ, বাবুল সুপ্রিয়র নেতৃত্বে বিজেপির কর্মীরা তৃনমূল কর্মীদের মারধোর করেছে। যদিও বাবুল বলেন, আমি জানতাম, প্রথম যেখানে যাবো, সেখানেই গণ্ডগোল করবে তৃণমূল। ওরা আমাকে আটকাতে চাইছে। কিন্ত সেটা পারবে না।
পাশাপাশি বীরভূমের নলহাটির হাবিসপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীদের মারধোর করার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তৃণমূল এই কেন্দ্রে বিজেপি কর্মীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। এক বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটে যায় বলেও অভিযোগ ওঠে। ঘটনাকে কেন্দ্রে করে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের লাঠি কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা।
পরিস্থিতি সামাল দিয়ে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের জেমুয়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ভোটাররা। বীরভুমের ল বাগানে ভোটারদের ভোটদানে বাধা ও ভোটারদের ভোটার কার্ড কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃনমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, স্থানীয় গ্রামবাসীদের প্রথমে এলাকার তৃণমূল পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে সেখানে তাদের ভোটার কার্ড আটকে রেখে চা খেতে দেওয়া হয়। তারপর তাদের ভোট না দিতে যাওয়ার জন্য বলা হয়। এরপরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে অবশ্য পুলিশের সহযোগিতায় ওই ভোটাররা ভোট দান করেন।
রাজ্যের বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস কর্মীদের মারধোর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমুলের বিরুদ্ধে। এই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর রঞ্জন চৌধুরী ঘটনাস্থলে এলে তাকে তৃণমূল কর্মীরা গালিগালাজ করে বলেও অভিযোগ। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ছাপ্পা ভোট, ভোটদানে বাধা, ভুয়ো ভোটার-এর মাধ্যমে ভোটদানের অভিযোগ উঠেছে।