বৃহস্পতিবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১১ ১৪৩২   ০৫ রজব ১৪৪৭

ভুয়া ঠিকানা দিয়ে চলছে রাইড শেয়ারিং নিবন্ধন

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০৪:১৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ রোববার

অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোতে চালকরা ভুয়া ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করছে বলে অভিযোগ পুলিশের। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

গেলো ২৫ এপ্রিল সকালে ব্র্যাক বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১) নিহত হওয়ার পর তাকে বহনকারী উবার বাইকার সুমনকে ২৬ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থেকে এবং ২৭ এপ্রিল  কাভার্ড ভ্যানসহ চালক আব্দুর রহমানকে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করে শেরে বাংলা নগর থানা পুলিশ।

চালকদের গ্রেফতার পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কলেজ গেটে থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে অবস্থানকারী একজন উবার কলার (ফাহমিদা হক লাবণ্য) এর কল পেয়ে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে সুমন তাকে ফোন দেন। লাবণ্য খিলগাঁও ছায়াবীথি মসজিদের সামনে যেতে চান জানিয়ে সুমনকে শ্যামলী ৩ নম্বর রোডের ৩১ নম্বর বাসার সামনে আসতে বলেন। সেখান থেকে লাবণ্যকে নিয়ে কলেজ গেট দিয়ে গন্তব্যে রওনা হন চালক। লাবণ্যকে বাইকে উঠিয়ে চালক বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাতে শুরু করেন। বাইকটি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কাছাকাছি আসলে পেছন থেকে একটি কাভার্ডভ্যান বাইকটিকে ধাক্কা দেয়। এসময় বাইক থেকে ছিটকে পড়েন লাবণ্য। কাভার্ডভ্যানটি তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। পথচারীরা ও বাইকার সুমন লাবণ্যকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লাবণ্যকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, হাসপাতালে উবারের চালক সুমন যে ঠিকানা দিয়েছিলেন সেই ঠিকানা ভুয়া। এমনকি তার নম্বরটি দিয়ে যে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে সেটাও ভুয়া। এসব ঠিকানায় তাকে পাওয়া যায়নি। উবারে রেজিস্টেশনের জন্য সুমন যে ঠিকানা দিয়েছে তাও ছিল ভুয়া। তাই তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। রাইড শেয়ারিং কোম্পানিলো কোনো যাচাই বাছাই ছাড়াই চালকদের অনুমতি দিচ্ছে। এসব চালকরা দক্ষ না, মাদকসেবী তা যাচাই করা হচ্ছে না। নারীদের বাইকে তুলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হঠাৎ হঠাৎ বাইকে ব্রেক ধরে। এগুলো মনিটরিং করে না রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো। তাদের আরোহীদের জন্য নিম্নমানের হেলমেট দেয়া হয়। এসব দ্রুত ঠিক করতে হবে।

সুমন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করায় তাকে খুঁজে পেতে পুলিশের সময় লেগেছে। উবার কর্তৃপক্ষও প্রথমে সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ। সুমনকে ২৬ এপ্রিল রাতে মোহাম্মদপুরের নবীনগর এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার পর কাভার্ডভ্যানসহ চালক আব্দুর রহমান পালিয়ে যায়।  বিপ্লব কুমার বলেন, সড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেলেও সেগুলো স্পষ্ট ছিল না। তাই কার্ভার্ড ভ্যানটি শনাক্ত করতে দেরি হয়েছে। পরবর্তীতে একটি সিসি ক্যামেরায় কাভার্ডভ্যানের গায়ে লেখা কোম্পানির নাম দেখে, তা শনাক্ত করা হয়। এরপর আশুলিয়া থেকে ওই চালককে গ্রেফতার করা হয়।

রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর অনিয়মের বিষয় উবারের সিনিয়র ম্যানেজার আরমানুল রহমান বলেন, রাইড শেয়ারিংয়ের একটা নীতিমালা হচ্ছে। আমরা পুলিশ, সরকার, বিআরটিএর সঙ্গে কাজ করছি। সেবাটি আরো কীভাবে ভালো সেবা দেয়া যায় সে চেষ্টা করছি। নিম্নমানের হেলমেট ও ভুয়া ঠিকানায় চালকদের নিবন্ধনের বিষয় জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

তবে ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তদন্তে যদি রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।