সেন্টমার্টিন যেতে লাগবে নিবন্ধন
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:০৭ এএম, ১৭ এপ্রিল ২০১৯ বুধবার
এখন থেকে সেন্টমার্টিন যেতে হলে, করা লাগবে নিবন্ধন। অনলাইনে নিবন্ধন করে ছাড়পত্র পেলে যাওয়া যাবে সেন্টমার্টিন। দ্বীপের অস্তিত্ব রক্ষায় পরিবেশ সংরক্ষণে সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপনের ওপরও বিধি নিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া নেয়া হচ্ছে আরো নতুন নতুন এ্যাকশন প্ল্যান।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘কক্সবাজারের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক সেমিনারে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমদ এসব কথা বলেন।
সুলতান আহমদ বলেন, এখন থেকে ইচ্ছা করলে যখন তখন সেন্টমার্টিন যাওয়া যাবে না। সেন্টমার্টিন ভ্রমণে ইচ্ছুকদের আগে থেকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে দৈনিক ১২৫০ জন পর্যটক ভ্রমণে যেতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, সেন্টমার্টিন দেশের বড় সম্পদ। প্রকৃতি পরিবেশ সুরক্ষা করা সম্ভব না হলে অচিরেই সেন্টমার্টিনের পরিবেশ হবে ভয়াবহ।
সেমিনারে জানানো হয়, ইসিএ এলাকা হিসেবে বর্তমানে সেন্টমার্টিন, সোনাদিয়া ও সমুদ্র সৈকত এখন পরিবেশগত ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে আগের পরিবেশ। পরিকল্পনা ছাড়া স্থাপনা গড়ে ওঠায় দূষণের কবলে পড়েছে হোটেল মোটেল জোন।
৩২৫টি হোটেলের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েছে মাত্র ৪৮টি। স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) বাস্তবায়ন করেছে মাত্র ৬টি হোটেল। কক্সবাজারে প্রতিদিন কঠিন ও তরল বর্জ্য সৃষ্টি হয় ৫০ থেকে ৭০ টন। মাত্র ১২ টন বর্জ্য শোধানাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু শোধানাগারে বর্জ্য আসে মাত্র ২ টন। এসব তথ্য থেকে বুঝা যায়, কক্সবাজার পর্যটন শহরের পরিবেশ দূষণের ভয়াবহ চিত্র কি?
সেমিনারে আরেক তথ্যে বলা হয়, দিন দিন পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এরইমধ্যে পানি ব্যবহারের চেয়ে, অপচয় হয় বেশি। পাহাড় কাটার মাটি, হ্যাচারির বর্জ্য ও হোটেল মোটেলের বর্জ্য সরাসরি যাচ্ছে সাগর ও নদীতে। বাঁকখালী নদী ভরাট, দখল হওয়ার কারণে শহরের লবনাক্ত পানি বেড়ে গেছে।
এসব নানা দূষণের কারণে হ্রাস পাবে পর্যটক। স্থানীয়দের জন্যও বসবাস অনুপযোগী হবে কক্সবাজার। পরিবেশ সুরক্ষায় সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। তবে দেরি করা যাবে না। দ্রুত উদ্যোগ নেয়া দরকার। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ উন্নয়ন) এসএম সরওয়ার কামালের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো অংশ নেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি লে. কর্নেল আনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবেদিল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও রিও প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউল হক, যুগ্ম পরিচালক মো. ফেরদৌস হোসেন খান, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ও কক্সবাজার বন পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপু।
