মধ্য রাতে মাঠে সশস্ত্রবাহিনী
নিউজ ডেস্ক
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৬:১০ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ সোমবার
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনীর স্ট্রাইকিং ফোর্স।
জানা গেছে, রোববার মধ্যরাত থেকে সশস্ত্রবাহিনী দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী দেশের ৩৮৯ উপজেলায় এবং নৌবাহিনী ১৮ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবে।
রোববার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে। নির্বাচনের ছয় দিন আগে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনে ইসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
নির্দেশনা পরিপত্রে বলা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা-থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিযুক্ত হবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে সশস্ত্র বাহিনী। সুষ্ঠ নির্বাচনের প্রয়োজনে ইসির কাজে যাবতীয় সহায়তা দেবে সশস্ত্র বাহিনী। প্রয়োজনে পরিস্থিতি বিবেচনা বা নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এই বাহিনী।
সেখানে আরো বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী। অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারবেন। জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারবেন। সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।
ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে কম-বেশি করা যাবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বিবেচনায় প্রতিটি স্তরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনাসদস্য সংরক্ষিত হিসেবে মোতায়েন থাকবেন। বিমানবাহিনী প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান জননিরাপত্তা বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীগুলোর অনুরোধে উড্ডয়নে সহায়তা করবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের ৬টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করবে। ওই ৬টি কেন্দ্রেও সেনাবাহিনী টেকনিক্যাল টিম হিসেবে কাজ করবে। সেজন্য ইসি একটি পরিপত্র জারি করেছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, যে ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে, সেখানে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেয়ার জন্য ৩ হাজার ৩শ’র মতো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। বাহিনীর সদস্য পোশাকে থাকবেন, কিন্তু কোনো ধরনের অস্ত্র-গোলাবারুদ বহন করবেন না। ইভিএম কেন্দ্রে যেসব সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য থাকবেন, তাদের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর নিকটতম টহল দল ও স্থানীয় ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়, সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি টিমের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আদলে এবারো ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। রোববার বিকেলের পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নামতে শুরু করেছে।
এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। এক হাজার ১৬ প্লাটুন বিজিবি এখন মাঠে কাজ করছে বলে জানান বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মহসীন রেজা।
