‘মেধাশ্রম আইন’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১০:০৯ এএম, ৭ এপ্রিল ২০১৯ রোববার
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের জন্য ‘মেধাশ্রম আইন’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ আইন প্রণয়নে খসড়া তৈরির জন্য সম্প্রতি ১৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিটিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শ্রম) রেজাউল হককে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রস্তাবিত আইনের একটি খসড়া শ্রম সচিবের কাছে দাখিল করতে হবে।
অতিরিক্ত সচিব (শ্রম) রেজাউল হক বলেন, এ ধরনের আইন আমাদের জন্য একেবারে নতুন। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে যারা কায়িক শ্রম দিয়ে নয় মেধা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, তাদের অধিকার রক্ষা করতে হবে। তাদের তো আমাদের একটা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। সেজন্যই মেধাশ্রম আইন করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করা হচ্ছে। এরপর আমরা মেধাশ্রমের সঙ্গে আর কারা সংশ্লিষ্ট, তাদের খুঁজে বের করে মতামত নেব। আইটি বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেব। আমরা কাজটা শুরু করতে চাই।
রেজাউল হক বলেন, কায়িক শ্রমের ক্ষেত্রে শ্রমঘণ্টা, মজুরি, ছুটিসহ অন্যান্য যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলো মেধাশ্রমের প্রেক্ষাপটে কী হবে, তা নতুন আইনে তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, আমাদের একটা শ্রম আইন আছে, ট্র্যাডিশনালি শিল্পে কায়িক শ্রম যারা দিচ্ছেন, আইনটা তাদের জন্য। আইটি (তথ্যপ্রযুক্তি) ইন্ডাস্ট্রি আমাদের এখানে ধীরে ধীরে একটা বড় ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হচ্ছে। আইটি বিষয়টি এখন একটি ক্রস কাটিং বিষয়। কারণ অন্যান্য শিল্পের মধ্যে এটি আছে। পোশাক শিল্পে গেলেও আপনি দেখবেন, সেখানে আইটির একটি বড় ভূমিকা আছে।
তিনি বলেন, মেধাশ্রমের ধরনটা অন্যরকম। কায়িক শ্রমটা যেমন ঘণ্টা দিয়ে নির্ধারণ করা হয়, মেধাশ্রমটা সেখানে সম্ভব নয়। কারণ আপনি যখন গাড়িতে যাচ্ছেন তখনও হয়তো কাজটা করছেন। তাই এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে অবশ্যই ভিন্ন আইনের প্রয়োজন রয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাত অনেক দূর এগিয়েছে। খাতটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় মেধাশ্রম আইনটি হলে ভালো হয়। আইনটি করার মূল কাজ শ্রম মন্ত্রণালয়ের। আমরা তাদের সহযোগিতা দেব।
খসড়া প্রণয়ন কমিটিতে যারা আছেন
কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একজন প্রতিনিধি, পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদফতরের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমের (বেসিস) একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) একজন প্রতিনিধি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একজন প্রতিনিধি, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালকের একজন প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শকের একজন প্রতিনিধি, ঢাকা বিভাগীয় শ্রম দফতরের পরিচালক মো. এস এম এনামুল হক এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিস্টেম এনালিস্ট।
কমিটি অন্যান্য দেশের (ভারত ও শ্রীলংকা) এ সংক্রান্ত আইনের কপি সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করবে। এছাড়া দেশে প্রচলিত অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইন যেমন- ট্রেড মার্কস আইন, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি আইন, পেটেন্ট ও ডিজাইন আইন, কপিরাইট আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ইত্যাদি পর্যালোচনা করবে এ কমিটি।
