শুরু হলো বঙ্গবন্ধু কাপ গলফ ওপেন
স্পোর্টস ডেস্ক:
আমাদের নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত : ১১:৫৫ এএম, ৪ এপ্রিল ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ঢাকা সেনানিবাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিত হল কোন আন্তর্জাতিক গলফ টুর্নামেন্ট।
আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হল এশিয়ান ট্যুর প্রফেশনাল গলফ টুর্ণামেন্ট ‘বঙ্গবন্ধু কাপ গলফ ওপেন ২০১৯’। চার দিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট চলবে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। টুর্নামেন্টে ২২ দেশের সেরা গলফাররা অংশ নিচ্ছেন।
বুধবার ভোরে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে শুরু হয় এ টুর্নামেন্ট। খেলার ফাকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বাংলাদেশের গলফার সিদ্দিকুর রহমান, মোহাম্মদ মুয়াজ ও সজীব। সবারই প্রত্যাশা ভালো কিছু করার।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমার কোনো প্রত্যাশা ছিল না। আমি আমার খেলাটাকে ইনজয় করতে চেয়েছি। আমার মনে হয় ফাইনালি আমি ইনজয় করতে পেরেছি। বোগিফ্রি রাউন্ড মিন করে যে আমি খেলাটা ইনজয় করেছি। দিনটা আমার জন্য দারুণ গেছে। পারের চেয়ে ৫ শট কমারুণ দিনই বলতে হবে। আমি দেখলাম যে আমাদের বাংলাদেশি অনেকেই মোটামুটি ভালো খেলেছে। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য অ্যাডভানটেজ। এটা উন্নতির লক্ষ্য। ধীরে ধীরে আমরা উন্নতি করছি। আমাদের অভিজ্ঞতা বাড়ছে বলেই আমরা ভালো করছি। এটা ব্যক্তিগত খেলা। এখন কে কোনটা নিয়ে কাজ করছে সেটা যার যার বিষয়। আমার মনে হয় যে সবারই একটু অভিজ্ঞতা হয়েছে। অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারলে সমস্যা কমে আসার কথা। বাকি তিনদিনের জন্য সবার প্রতি রইল আমার শুভ কামনা।
ঘরের কোর্সে খেলা অবশ্যই বাড়তি সুবিধা। তৃতীয় সপ্তাহের চলছে টানা খেলছি। মালয়েশিয়াতে গরম ছিল, দিল্লিতেও। দিল্লিতে কাট মিস করেছি। তারপরও ওখানে আমি অনুশীলন করেছি। একটু টায়ার্ড তো অবশ্যই। হোম কোর্সে টুর্নামেন্ট। সেভাবেই ইনার্জি নিয়ে খেলছি।
মোহাম্মদ মুয়াজ বলেন, চারটি এশিয়ান ট্যুর খেলছি। এটা আমার সেরা রেজাল্ট।অবশ্যই ভালো লাগছে। এটা কুর্মিটোলায় আমার বেস্ট রাউন্ড। এর আগে কখনই এত ভালো রেজাল্ট হয় না। সাভার গলফ ক্লাব থেকে উঠে এসেছি। কুর্মিটোলায় সেই ছোট বেলা থেকে খেলছি। যত টুর্নামেন্ট হয় এখানে অংশ নেই। এডিটি সবগগুলোতেই কাট পাইছি। এশিয়ান ট্যুরে কোনটাতেই কাট পাই নাই। চেষ্টা করব সামনের রাউন্ড গুলোতে ভালো করার চেষ্টা করব।
বিদেশীদের মতো আমি ভালো মারার চেষ্টা করছি। অনেক জায়গায় কোর্স করছি। কোথাও ভালো হচ্ছে, কোথাও হচ্ছে না। ছোট বেলা থেকেই খেলছি। সেই ক্যাডি তারপর প্রো হইছি। বিপিজিএ যেদিন থেকে শুরু হইছে সেদিন থেকে খেলছি। ২০১৩ সাল থেকে। সাভারে চ্যাম্পিয়ন হইছি, চিটাগং ভাটিয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন হইছি। সেকেন্ড হইছি অনেকগুলোতেই।
অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে কম টুর্নামেন্ট হয়। সামিট একটা টুর্নামেন্ট খেলেছি। এশিয়ান ট্যুরের আগে অনুশীলন ম্যাচ খেলছি। এই কোর্সে এখন সব সময় খেলা হয় না। সাভার কোর্স সব সময় ওপেন থাকে। সেখানেই অনুশীলন করি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক মানের কোর্স, কোর্সটা বেশ জটিল। সাভারের কোর্স তো আসলে সে রকম নয়। খোলা মেলা মাঠ। এখানে দুর্বা ঘাস, ওখানে ঝাউ ঘাস, পাতা ঘাসের মতো।
আগের তিনটি এশিয়ান ট্যুরেও শুরুটা ভালো করেছিলাম। দ্বিতীয় দিনে গিয়ে মানসিকভাবে আর চাপ নিতে পারি নাই। মানসিক চাপটা নিতে পারছি না। এক শট খারাপ খেললেই দেখা মাথা নষ্ট হয়ে যায়। এরপর কাম ব্যাক করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। ভালো খেলতে হবে এই চিন্তা করতে গিয়ে আরো বাজে খেলে ফেলি।
আগের সেরা ছিল রেজাল্ট ছিল পারের চেয়ে দুই শট কম। সেটা ৭২ পারের কোর্সে। এখন ৭১ পারের কোর্সে ৬ শট কম এটা অনেক ভালো রেজাল্ট। এমন ফল কল্পনাতেও ছিল না। কাট পাওয়ার টার্গেট নিয়েই টুর্নামেন্ট শুরু আমার। কিছুটা মানসিক চাপও ছিল। অনেক মিডিয়া; হঠাৎ করে ছবি তুললে প্রেসার তো আসেই।
আগের তিন টুর্নামেন্টে অনেক ভুল করেছি। দেখা গেল খুব তাড়াহুড়ো করে মারছি। প্রেসার নিতে পারছি না। কিছু কিছু নোট করেছি। যেগুলো এবার করা যাবে না। রেজাল্ট তাহলে অবশ্যই আসবে। একটি বোগি হতেই পারে। আগের কমিটি-বর্তমান কমিটি অনেক টুর্নামেন্ট দিছে। বছরের ১৫-২০টা টুর্নামেন্ট থাকে। টুর্নামেন্টগুলো খেলার কারণে আত্মবিশ্বাস। টুর্নামেন্ট গুলো চলতে থাকলে আত্মবিশ্বাসটাও বেড়ে যায়। দেখা যাক কালকের পর বুঝে যাবে কী হয়। কালকের দিন ভালো হলে বাকি দিনগুলোও ভালো যাবে। প্রথমে চিন্তা করেছি কোনো মতে টিকে থাকা। এখন যেহেতু একটা লেভেলে আছি সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করব।
প্রতিটি আসরেই খেলেছেন সজীব। এবার টুর্নামেন্ট খেলতে নেমে তিনি জানান, দিনটা শুরু থেকেই ভালো গেছে। শুরুটাই ভালো হয়েছে। পাটিং কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সব দিলে ভালো দিন গেছে (পারের চেয়ে ৫ শট কম)।
প্রথম দিন ভালো করলেও পরের দিন সেটা ধরে রাখতে পারে না এ প্রশ্নের উত্তরে সজিব বলেন, আমাদের কিছু শারীরিক সমস্যা (ফিজিক্যাল ফিটনেস) আছে। এ কারণে আমরা নার্ভাস ফিল বেশি করি, অনেক সময় শরীর দুর্বল থাকে, অনেক চিন্তাও কাজ করে।
প্রথমদিন ভালো করেছি। বাকি দিনগুলো ভালো যাবে। একেবারে শিওর দিতে পারছি না। ভালো হলে ট্রফি ধরে রাখতে পারব। বিদেশীরা সব জায়গায় খেলে অভ্যস্ত, আমরা সব জায়গায় খেলতে পারি না। ওদের চেয়ে আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। ফিজিক্যাল ফিটনেস কিছু ধরনের ব্যায়াম আছে সেগুলো করার সুযোগ পেলে আমরা আরো ভালো করতে পারব। ফেডারেশনও আমাদের সহায়তা করছে। সব ধরনের সুবিধা দিচ্ছে। আমরা আর্মি ক্লাবে গিয়ে ফিজিক্যাল প্র্যাকটিস করি।
গলফ হচ্ছে নিজের প্রতি বিশ্বাসের খেলা। আজ যেহেতু ভালো হইছে, বাকি দিনগুলোতে ভালো হবে। বিদেশী গিয়ে ফিজিক্যাল প্র্যাকটিসের সুযোগ পাচ্ছি না।