শনিবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫   পৌষ ১২ ১৪৩২   ০৭ রজব ১৪৪৭

শেখ হাসিনা নকশি পল্লী অর্থনৈতিক মুক্তির দিশারী

আমাদের নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত : ০২:৩০ পিএম, ২৯ মার্চ ২০১৯ শুক্রবার

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, সরকারি অনেক অনেক প্রকল্প গ্রহণ করি। কিন্তু জামালপুরের শেখ হাসিনা নকশি পল্লী প্রকল্প হবে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির দিশারী।

 

জামালপুর জেলার আশেপাশের শেরপুর, টাঙ্গাইল ও বগুড়া জেলার মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কেন্দ্র বিন্দু হবে এ জামালপুর। 

জামালপুরে শেখ হাসিনা নকশি পল্লী প্রকল্পটি স্থাপন করার অনুমোদন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম এসব কথা বলেন। 

জামালপুর জেলা হস্তশিল্প ব্যবসায়ী সমিতি বৃহস্পতিবার দুপুরে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। 

মির্জা আজম আরো বলেন, ‘জামালপুর শহরের পাদদেশে ঝিনাই নদীরপাড় ঘেঁষে এ শেখ হাসিনা নকশি পল্লী প্রকল্পের জন্য ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২০০  কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেকের সভায় এরই মধ্যে ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, ‘জামালপুরের নকশি কাঁথা নিয়েই শুধু শেখ হাসিনা নকশি পল্লী নয়। সারা বাংলাদেশের যত ধরনের হস্তশিল্প আছে তার সবগুলোরই হোল সেল মার্কেট হবে এ শেখ হাসিনা নকশি পল্লীতে। অন্তত তিন হাজার ভবন হবে এখানে। চারজন উদ্যোক্তার জন্য একটি করে কারখানা স্থাপনের জন্য ভবন বরাদ্দ থাকবে। তারা তাদের পণ্য তৈরি করবে সেই জায়গায়। এতে করে ১২ হাজার উদ্যোক্তার কারখানা থাকবে এখানে। 

তাদের জন্য থাকবে একটি বিশাল শপিংমল। সেই শপিংমলে প্রতিটি পণ্যের জন্য একটি বা দুটি করে শো-রুম বরাদ্দ দেয়া হবে। 

তিনি আরো বলেন, ‘এটি আন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় বিদেশি ক্রেতাদের জন্য একটি ফাইভ স্টার মানের হোটেল স্থাপন করা হবে। এর পাশাপাশি এটার ভেতরেই একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। থাকবে থিমপার্ক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হস্তশিল্প মেলা আয়োজনের সবরকমের ব্যবস্থা থাকবে। যাতে করে জামালপুরের হস্তশিল্প নকশি কাঁথাসহ বাংলাদেশের সব ধরনের হস্তশিল্পের ব্যবসার প্রসার ঘটে।’

মির্জা আজম বলেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের পরে জামালপুরের পরিচিতি বাড়বে। শুধুমাত্র জামালপুরের হস্তশিল্পের সঙ্গে জড়িতদের পুনর্বাসনের জন্য নয়। এখানে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে ভালো প্রভাব রাখবে এবং জামালপুরের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। এ প্রকল্প চালু হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে জামালপুরে কোনো দরিদ্র মানুষ থাকবে না। জামালপুর হবে দেশের অন্যতম একটি জেলা। বিদেশীরা বাংলাদেশের পরে এ জামালপুরকেই চিনবে।’ 

তিনি এ প্রকল্পটি জামালপুরে স্থাপনের সুযোগ করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং অভিনন্দন জানান।

জামালপুর জেলা হস্তশিল্প ব্যবসায়ী সমিতি জামালপুরের আহবায়ক বিজন কুমার চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ডিসি আহমেদ কবীর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, এএসপি বাছির উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, ন্যাশনাল ব্যাংক জামালপুর শাখার কর্মকর্তা খন্দকার সেলিম, হস্তশিল্প ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম-আহবায়ক জাহাঙ্গীর সেলিম, শাহিনুর আলম ও সাঈদা আক্তার প্রমুখ।

এর আগে শেখ হাসিনা নকশি পল্লী প্রকল্পের অনুমোদন এবং প্রাথমিক পর্যায়ে প্রকল্প স্থানে মাটি ভরাট কাজের জন্য ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শহরের শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লীর সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। 

শোভযাত্রায় নেতৃত্ব দেন সদর আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেন। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অডিটরিয়ামে গিয়ে শেষ হয়। 

জেলার শতাধিক হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা, নারীকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার সর্বস্তরের মানুষ এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।